প্রথম ডার্বি ড্র হয়েছিল। কিন্তু আইলিগে শেষ কয়েকটি ম্যাচে মোহনবাগানের তারকা ফুটবলাররা দুরন্ত ফর্মে ফিরতে শুরু করেছিলেন। ফলে শিলিগুড়িতে ফিরতি ডার্বি নিয়ে আশায় বুক বাঁধছিলেন মোহনবাগানের সমর্থকেরা। সেই আশা এদিন পূর্ণ হল।
ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আইলিগে ক্রম তালিকায় ২ নম্বরে উঠে এল মোহনবাগান। তবে এই জয়ের মাহাত্ম্য কেবল লিগ তালিকায় কিছুটা ওপরে উঠে আসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কলকাতার যুযুধান এই দুই পক্ষের লড়াই কলকাতার ফুটবলকে কোথাও যেন বাঁচিয়ে রেখেছে। সবুজ-মেরুন আর লাল-হলুদের সমর্থকদের পাড়ায়, রকে, চায়ের আড্ডায় আর হালফিল সোশ্যাল মিডিয়ায় বাকযুদ্ধটা কিন্তু বাঙালির প্রাণ। আর এখানেই ডার্বির সার্থকতা।
চিংড়ি-ইলিশের এই আদিঅনন্ত লড়াইয়ে হার জিত কারও মন থেকে মুছে দেয় শান্তি, আনন্দ। আর অন্যপক্ষের সুযোগ হয় অপর পক্ষকে তেড়ে কথা শোনানোর, টিপ্পনীর। তবে এই লড়াই বেঁচে আছে কোথাও গিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ বলেই। এদিনও সেটাই হল।
লাল-হলুদ সমর্থকেরা যেখানে মুখ থমথমে করে মাঠ ছাড়লেন। তখন অন্যপ্রান্তে সবুজ মেরুনের উল্লাস বাঁধ ভেঙেছে। এদিন কিন্তু ফারাকটা গড়ে দিল মোহনবাগানের টিম গেম। বরং লাল-হলুদকে অনেকটাই চাপে দিশেহারা ঠেকেছে।
খেলার ৩৫ মিনিটের মাথায় ফ্রি-কিক থেকে মোহন সুপারস্টার হাইতির ছেলে সনি নর্ডির ছবির মত গোল এগিয়ে দেয় মোহনবাগানকে। এর ঠিক ৮ মিনিট পর ফের মোহনবাগানের কামাল। ফের ইস্টবেঙ্গল জালে বল। দ্বিতীয় গোলের তারকা তরুণ প্রতিভা আজহারউদ্দিন মালিক। ফলে হাফ টাইমের আগেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। যা মোহনবাগানের জন্য বাড়তি মনোবল তৈরি করে।
অন্যদিকে প্রবল চাপের মুখে ফেলে দেয় ট্রেভর মর্গানের দলকে। দ্বিতীয়ার্ধে চেষ্টা চালিয়ে গেলেও মোহন গোলের মুখ খুলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। খেলার একদম শেষ প্রান্তে পৌঁছে যখন মোহনবাগানের জয় কার্যত নিশ্চিত সেই সময়ে ৯০ মিনিটের মাথায় ১ গোল শোধ করে লাল-হলুদ। গোল করেন বোর্জেস। এরপর অতিরিক্ত সময় ৪ মিনিট পেলেও তাতে কোনও কাজের কাজ করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।
ডার্বি জেতা মানে এই দুই দলের কাছেই প্রায় অর্ধেক প্রতিযোগিতা জিতে নেওয়া। সেই চরম ইগোর লড়াই জিতে সন্তুষ্ট মোহন কোচ সঞ্জয় সেনের দাবি সব ঠিকঠাক এগোলে ৫-০-এ ডার্বি জিততেন তাঁরা।