শীতের দুপুর। রবিবার। তায় আবার মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দ্বৈরথ। ফলে বেলা বাড়তেই শহর ফুটছিল ফুটবল জ্বরে। ডার্বি দেখতে সবুজ-মেরুন বা লাল-হলুদের সমর্থকেরা টেম্পো, মাটাডোর, গাড়ি, বাইকে ছিলেন সল্টলেক স্টেডিয়ামমুখী। মাটাডোর, টেম্পো সাজানো হয়েছিল প্রিয় দলের রঙে। বেলুনে, পতাকায়। সঙ্গে ছিল বক্স বাজিয়ে গান, হুল্লোড়। সব মিলিয়ে উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা ছিল শহর কলকাতা। এদিন স্টেডিয়ামেও ছিল চোখে পড়ার মত ভিড়। খেলা শুরুর পর প্রথম দিকে মোহনবাগানকে কিছুটা ছন্দহীন লাগলেও মিনিট পাঁচেকের পর থেকেই খেলায় আধিপত্য নিতে শুরু করে সনি নর্ডির দল। বারবার আক্রমণ আছড়ে পড়তে থাকে লাল হলুদ গোলে। পাল্টা আক্রমণ চলছিল ইস্টবেঙ্গলের দিক থেকেও। সুযোগ দু’দলই তৈরি করেছে। কিন্তু তিন কাঠিতে বল ঢোকানোটা হচ্ছিল না। হল খেলার ৩৯ মিনিটের মাথায়। সনির করা মাপা কর্নার থেকে গোল করে সবুজ মেরুনকে এগিয়ে দেন কিংসলে ইজি। আইলিগের প্রথম সম্মুখসমরে ১ গোলে এগিয়ে মোহন গ্যালারি তখন আনন্দে আত্মহারা। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে তখন চরম হতাশার থমথমে চেহারা। তবে খেলা তখনও অনেক বাকি। এটাই ছিল লাল হলুদের ভরসা। ১ গোলে এগিয়ে থাকাটা বড় কথা নয়। যে কোনও মুহুর্তে গোল শোধও হতে পারে।
দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু মোহনবাগানের গোলমুখে বার বার আক্রমণ শানাতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। পাল্টা মোহনবাগানও একের পর এক ইস্টবেঙ্গলের গোলমুখ খুলেও ফিনিশিং করতে পারেনি। সুযোগ দু’পক্ষই নষ্ট করেছে। তবে এদিন মোহনবাগানকে বারবার বাঁচিয়ে দিয়েছে শিল্টন পালের অভিজ্ঞ হাত। সময়ে বল ক্লিয়ার করে শিল্টন এদিন কার্যত মোহন জয়ের অন্যতম নায়ক হয়ে রইলেন।
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান মানেই প্রবল উত্তেজনা। গোটা রাজ্যের মানুষের আবেগ জড়িয়ে থাকে এই ম্যাচের জেতা হারার সঙ্গে। সেই লড়াইতে এদিন সঞ্জয় সেনের ছেলেরাই শেষ হাসি হাসলেন। তবে মোহনবাগানের ডিকা দ্বিতীয়ার্ধে হাঁটুতে ভয়ংকর চোট পেয়েছেন। তিনি আপাতত সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। এদিন ডার্বি জিতলেও আইলিগের সবে শুরু। মোহনবাগানের পরের ম্যাচ চার্চিলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গলকেও দ্রুত এই হারের দুঃখ ভুলে মাঠে নামতে হবে। তবে এদিন মোহনবাগানের জয়ের খুশি কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হয়েছে রাত পর্যন্ত।