রামকিষাণ গ্রেওয়ালের আত্মহত্যা যে তাদের কতটা বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব। সামনেই শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। বছর ঘুরলেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিরোধীদের হাতে এমন ‘বার্নিং’ ইস্যু চলে আসায় তাদের রাতের ঘুম ওড়ার জোগাড়। তার ওপর রাহুলকে আটক করে কংগ্রেসকে ইতিমধ্যেই অনেকটা ‘মাইলেজ’ দিয়ে ফেলেছে পদ্মশিবির। যাকে কার্যত ‘পলিটিকাল ব্লান্ডার’ বলেই মনে করছে বিজেপির একাংশ। এই অবস্থায় মৌন থাকাই শ্রেয় বলে মনে করছে তারা। ফলে স্পিকটি নট! মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির বড়, ছোট, মাঝারি সব নেতাই। কেবল একটা কিছু বলতে হয় তাই মুখতার আব্বাস নাকভি এদিন রাহুলের নাম না করে তাঁকে ‘পার্টটাইম পলিটিশিয়ান’ বলে খোঁচা দিয়েছেন। যদিও তাতে কংগ্রেস নেতৃত্ব রেগে যাওয়ার বদলে মুখ টিপে হেসেছেন। কারণ তাঁরা বিলক্ষণ বুঝে গেছেন বিজেপিকে কোণঠাসা করে জাতীয় রাজনীতির ময়দানে কামব্যাকের এমন সুবর্ণ সুযোগকে এখনও পর্যন্ত নির্ভুলভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তাঁরা।
অন্যদিকে পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদের মতই বিজেপির কপালে মৃদু ঘাম জমিয়ে কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খার্গে সাফ জানিয়েছেন, আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেস জম্মু কাশ্মীর ও রামকিষাণ ইস্যুতে সংসদে সরব হবেন। যার মর্মার্থ সংসদ অচলের সমূহ সম্ভাবনা। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশ যাদবও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এদিন রামকিষাণ ইস্যুতে খোলাখুলি সরব হয়েছেন। আর সেটাই এখন মোদী ব্রিগেডের চিন্তার বড় কারণ। কারণ রামকিষাণকে সামনে রেখে যেভাবে কংগ্রেস সহ আঞ্চলিক দলগুলি এককাট্টা হতে শুরু করেছে তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা।
২০১৯-এ মোদীর বিজয়রথের চাকায় লাগাম দিতে বেশ কিছুদিন ধরেই একটা ফ্রন্ট গড়ার কথাবার্তা চলছে। কখনও সেই সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়, কখনও বা আবার নেতিয়ে পড়ে। রামকিষাণের আত্মহত্যা সেই ধিকিধিকি জ্বলা সম্ভাবনায় ঘৃতাহুতি দিয়েছে। বুধবার ঝাড়গ্রামের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীও রামকিষাণ ইস্যুতে সরব হয়েছেন। ফলে কংগ্রেস, তৃণমূল, সপা, আপ, যেভাবে একএক করে দল বামলা গ্রামকে সামনে রেখে একজোট হচ্ছে তাতে ফ্রন্টের সম্ভাবনা ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে। যা বিজেপির জন্য মোটেও সুখবর নয়। আর সেটা হাড়েহাড়ে টেরও পাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব।