জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামের মত ঘরের মাঠ। মাঠ ভর্তি দর্শকের সমর্থন। চেনা আবহাওয়া। সবকিছু সত্ত্বেও আমেরিকার কাছে ৩-০ গোলে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ হারল ভারত। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলতে নামার ঐতিহাসিক মুহুর্তকে সুখস্মৃতি করে রাখতে পারল না তারা। গোটা দেশ এদিন চেয়েছিল ১১টা কিশোরের দিকে। বিশ্বের ক্রীড়া মানচিত্রে ফুটবলের আসরেও ভারত কিছু করতে পারে তা দেখিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে শুধু ওই ১১টা খেলোয়াড়ের ছিল না। ছিল ১৩০ কোটি ভারতীয়েরও। সকলেই তাই তাকিয়েছিল ভারত নীল ব্রিগেডের দিকে।
খেলার শুরুতে টক্কর ঠিকঠাকই চলছিল। ৩০ মিনিটের মাথায় গণ্ডগোল পাকালো আমেরিকার স্বপক্ষে যাওয়া একটা পেনাল্টি। যা থেকে অতি সহজে মার্কিন মুলুককে ১ গোলে এগিয়ে দেন জে সার্জেন্ট। ১ গোলে পিছিয়ে থাকা খেলায় ফিরে আসা খুব শক্ত নয়। প্রথমার্ধের শেষ পর্যন্ত ভারত চেষ্টাও চালিয়ে গেছে। যদিও আমেরিকার গোলমুখ খুলে উঠতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে কর্নার থেকে আসা পাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভারতীয় খেলোয়াড় তা ঠেলে দেন মার্কিন খেলোয়াড় সি ডারকিনের পায়ে। ভুল করেননি ডারকিন। বক্সের মধ্যে পাওয়া বল বুলেটের গতিতে পাঠিয়ে দেন জালে। কাউকে নড়ারও সময় দেননি তিনি। ৫১ মিনিটের মাথায় এই গোল আমেরিকাকে ২ গোলে এগিয়ে দেয়। এরপর তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ শুরু করে ভারত। কিন্তু মার্কিন ডিফেন্সের জমাট ভাব আর ভারতের বেশ কিছুটা ছন্নছাড়া ফুটবল ঘড়ির কাঁটা ঘোরাতে থাকে কিন্তু গোলমুখ খোলে না। ৭০ মিনিটের পর ভারতীয় ফুটবলারদের কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়তে দেখা গেছে। বল নিয়ে ছোটায় গতি নেই। পাসে জোর নেই।
এদিনের খেলায় আরও একটা জিনিস নজর কেড়েছে। অবস্থা তৈরি করতে পারলেও ভারতের কোনও ফিনিশিং নেই। ফিনিশারও নেই। ফলে বেশ কয়েকবার গোলের অবস্থা তৈরি হয়েও গোল হয়নি। ৮২ মিনিটের মাথায় ভারতের একটা কর্নার গোলের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করে। ভারতীয় খেলোয়াড়ের সপাট শট ক্রসবারে লেগে ছিটকে বেরিয়ে আসে। দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু সেই বল ফেরত আসার পর কাউন্টার আক্রমণে আমেরিকা কিন্তু তাদের তৃতীয় গোলটা করে দেয়। ৮৪ মিনিটে ভারতের সব খেলোয়াড় মার্কিন চৌহদ্দিতে উঠে আসার ফায়দা তুলে গোলকিপারকে পরাস্ত করে জালে বল পাঠিয়ে দেন এ কার্লটন। ম্যাচ শেষ হয় ৩-০ গোলে। এদিন অন্য ম্যাচগুলির রেজাল্ট হল –
গ্রুপ এ – কলম্বিয়া – ০, ঘানা – ১
গ্রুপ বি – নিউজিল্যান্ড – ১, তুরস্ক – ১
গ্রুপ বি – প্যারাগুয়ে – ৩, মালি – ২