ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। সেই সুবাদে সুযোগ মিলেছিল ফুটবলের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের মত আসরে খেলার। পড়ে পাওয়া সেই সুবর্ণ সুযোগ কার্যত হেলায় হারাল ভারত। বিশ্ব ফুটবলের সামনে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরার এত বড় সুযোগ ফের কবে আসবে জানান নেই। কিন্তু সেই সুযোগ কাজেই লাগাতে পারল না ভারতের ছেলেরা।
প্রথম ম্যাচে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৩-০-তে হার। এরপর কলম্বিয়ার সঙ্গে ড্র করার সুযোগ হাতে পেয়েও ২-১-এ হার। বাকি ছিল তৃতীয় ম্যাচে ঘানার বিরুদ্ধে কিছু করে দেখানো। বৃহস্পতিবার সেই ম্যাচে শুরুটা ভাল করেও ছিল ভারত। প্রথমার্ধে ঘানাকে সুযোগ বড় একটা দেয়নি। কেবল ৪২ মিনিটের মাথায় একটা গোল হজম করা ছাড়া। তখনও সুযোগ ছিল খেলায় ফেরার। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ভারত যে কৌশল সাজাল, তার চেয়ে ঘানার কৌশলের পেশাগত চেহারা অনেক শক্তিশালী ছিল। ফলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই এক অন্য ঘানাকে মাঠে খুঁজে পাওয়া গেল। তুলনায় ভারত যেন ক্রমশ কোথায় হারিয়ে গেল।
গোটা মাঠ জুড়ে তখন ঘানার কিশোরদের দাপাদাপি। ৫২ মিনিটের মাথায় এল ঘানার দ্বিতীয় গোল। বুলেটের মত শট যেন চিরে দিল ভারতের জাল। প্রথম ও দ্বিতীয়, দুটো গোলই এল আইয়া-র পা থেকে। ঘানা এগিয়ে গেল ২-০ গোলে। ভারতের আসা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর আকার নিল। ২ গোলে এগিয়ে থাকার একটা মানসিক শান্তি আছে। যেটা আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দেয়। তাই ঘানা তখন মাঠে প্রায় একাই রাজত্ব করছে। কোনওভাবেই ঘানার গোল মুখ এরপর আর খুলে উঠতে পারেনি ভারত। খেলার প্রায় শেষ প্রান্তে এসে ৮৬ মিনিটে ডানসু ও ৮৭ মিনিটে টোকু-র করা পরপর ২টি গোল ঘানাকে ব্যবধান বাড়াতে সাহায্য করে। ভারত হারে ৪-০ গোলে। ফলে পরপর ৩টে ম্যাচের তিনটেতেই হার।
এমনও নয় যে প্রবল লড়াই দিয়ে একটুর জন্য ম্যাচ ফসকেছে। প্রতিটি ম্যাচেই বিপক্ষকে দানবের মত লেগেছে ভারতের সামনে। খেলার দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা দমেও হারতে দেখা গেছে ভারতকে। সব মিলিয়ে বিশ্বমঞ্চে ফুটবল খেলার জন্য এখনও কী আদৌ তৈরি ভারত? অন্তত খেলায় তো সেই ছাপ দেখতে পাওয়া গেল না। অন্যদিকে এদিনের জয়ের ফলে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল ঘানা। এ গ্রুপ থেকে ছিটকে গেল ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শেষ ষোলোর যোগ্যতা অর্জন করল ঘানা ও কলম্বিয়া।