স্কুলে চূড়ান্ত উৎশৃঙ্খল আচরণ করত ১৯ বছরের নিকোলাস ক্রুজ। কিছুদিন আগে তাকে বহিষ্কার করেন ফ্লোরিডার মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার বদলা যে প্রাক্তন ছাত্র এইভাবে নেবে তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তাঁরা। বহিষ্কৃত ছাত্রের তাণ্ডবে স্কুলের ১৭ জন নিরীহ পড়ুয়া প্রাণ গেল অকালে।
বুধবার স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটের সময় আচমকা ফায়ার অ্যালার্মের আওয়াজ কানে আসে সকলের। আগুন লাগলে এই অ্যালার্ম বাজানো হয়ে থাকে। স্কুল চত্বরে আগুন লাগার ভয়ে ছুটির আগেই ক্লাস থেকে বেড়িয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। শ্রেণিকক্ষ ও অফিস ঘর ছেড়ে বাইরে চলে আসেন স্কুলের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরাও। এটাই তো আসলে চাইছিল অপমানের বদলা নিতে উন্মুখ নিকোলাস। তাই পরিকল্পনামাফিক ইচ্ছা করে ফায়ার অ্যালার্ম বাজিয়েছিল সে।
স্কুল তাকে তাড়িয়েছে ঠিকই। কিন্তু স্কুলের অলিগলি তো এতদিনে নখদর্পণে এসে গিয়েছিল তার। তাই বৃহস্পতিবার স্কুলের নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে স্কুলে ঢুকতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি নিকোলাসকে। একটি রাইফেল, গ্যাস মাস্ক, স্মোক গ্রেনেড আর অনেকগুলো ম্যাগাজিন নিয়ে স্কুলের ভিতরে ঢুকে পড়ে ওই ছাত্র। তারপর সুযোগ বুঝে একসঙ্গে অনেকজনকে পাওয়ার বন্দোবস্ত করে সে। প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলতে থাকা নিকোলাস এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে সকলের ওপর। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ছুটোছুটি পড়ে যায় স্কুলের ভিতর। পড়ুয়াদের বাঁচাতে গিয়ে নিকোলাসের গুলিবৃষ্টির মুখে পড়ে প্রাণ হারান স্কুলের একজন ফুটবল কোচ। নিকোলাসের হামলায় মৃত্যু হয় আরও ১৬ জনের। গুরুতরভাবে জখম আরও ৫০ জন। আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হামলার কিছুক্ষণ পরে বিশাল পুলিশবাহিনী এসে ঘিরে ফেলে স্কুলটিকে। স্কুলে হামলাবাজের গুলি চালানোর খবর পেয়ে ছুটে আসেন পড়ুয়াদের উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা। মৃত ও আহতদের আত্মীয়দের কান্নার আওয়াজে ভারি হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। বেশ কিছুক্ষণ তাণ্ডব চালানোর পর হামলাবাজ নিকোলাস আত্মসমর্পণ করে পুলিশের কাছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ব্যক্তিগত আক্রোশ ছাড়াও নিকোলাসের হামলার সঙ্গে নাশকতার কোনও যোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ফ্লোরিডার নামকরা স্কুলে ফের হামলাকারীর আক্রমণের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রশাসন।