মানুষের মত কথা বলা তিমি
জলের বুকে ঢেউ তুলে সে নানা অঙ্গভঙ্গি করে খেলা দেখাতে পারদর্শী। আবার নিজের প্রশিক্ষকের কথার অনুকরণ করাতেও তার জুড়ি মেলা ভার।
তোতা, টিয়া, ময়না আর তিমি মাছের মধ্যে কি বিষয়ে মিল বলুন তো? এরা প্রত্যেকে মানুষের গলার স্বর অনুকরণ করে কথা বলতে পারে। ভাবছেন, পাগলের প্রলাপ আর কি! তোতা, টিয়া বা ময়না না হয় মানুষের কথা অনুকরণ করে বোল আওড়ায় ঠিকই। তিমি মাছ কবে থেকে কথা বলা শুরু করল?
আসলে প্রকৃতির মতই রহস্যময় প্রকৃতির কোলের সন্তানেরাও। সমুদ্রের অতল নীল জলরাশির বুকে ঘুরে বেড়ায় যে তিমি, তারাও পেল মানুষের ভাষা।
ফ্রান্সের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চলের অ্যান্টিবেসের মেরিন থিম পার্কের ঘরের মেয়ে ‘উইকি’। ওরকা প্রজাতির এই তিমির বয়স মাত্র ১৪। এইটুকু বয়সেই বাধ্য ছাত্রীর মতো খেলাধুলোর পাশাপাশি সে শিখছে কথা বলার পাঠ।
জলের বুকে ঢেউ তুলে সে নানা অঙ্গভঙ্গি করে খেলা দেখাতে পারদর্শী। আবার নিজের প্রশিক্ষকের কথার অনুকরণ করাতেও তার জুড়ি মেলা ভার। সব কথা সে যদিও বলে উঠতে পারে না। আপাতত হাতে গোনা কিছু শব্দই অদ্ভুত ভঙ্গিতে আওড়াতে পারে উইকি।
কি সেই শব্দগুলো? এই যেমন আপনাকে দেখে ‘শিকারি তিমি’ বলে উঠতে পারে ‘হ্যালো’। আবার কাউকে বিদায় জানানোর সময় মিষ্টি করে ‘বাই’ বলতেও জানে সে। ১, ২, ৩-এর মতো সংখ্যাও অনায়াসে গুণতে পারে উইকি।
তিমির স্বগোত্রীয় ডলফিন মানুষের ভাষা অনুকরণ করতে পারে। এবারে ডলফিনের মতই মানুষের ভাষা সঙ্গী হয়ে ওঠার তালিকায় ঢুকে পড়ল তিমি।
মানুষের মুখের কথা রপ্ত করা প্রথম তিমি হিসেবে উইকির কদর এখন তাই তুঙ্গে। তবে তিমির কথা বলার মধ্যে নেই কোনও অলৌকিকত্বের গল্প।
প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে, তিমি মাছের শ্রবণ ক্ষমতা প্রবল। বিশেষত ওরকা প্রজাতির তিমি মাছের শ্রবণ ক্ষমতা খুবই প্রখর। জলের ভিতরে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে তারা ব্যবহার করে বিশেষ ‘সিগনাল’। এই ক্ষমতার গুনেই মানুষের মুখের ভাষা আয়ত্ত করতে ‘উইকি’-র সুবিধা হয়েছে বলে মনে করছেন প্রাণি গবেষকরা।