ইউরোপ শুনলেই মানুষের মনে যেটা ফুটে ওঠে সেটা হল ঠান্ডা মহাদেশ। এখানে সারাক্ষণই বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব থাকে। কোথাও বেশি কোথাও কম। অনেক জায়গায় বরফ পড়ে। বাস্তবটা ঠিক তেমনটা নয়। কয়েকটি দেশ বাদ দিলে ইউরোপের অধিকাংশ দেশ কিন্তু ইদানিং গরমে পুড়ছে। এমন গরম এই সব দেশের বাসিন্দারা আগে দেখেননি। প্রতি বছরই গরমকালে পারদ চড়ায় রেকর্ড গড়ছে এক একটি দেশ। যেমন ফ্রান্স গড়ল এবার। ফ্রান্সের কোনও কোণায় আজ পর্যন্ত কখন তাপমাত্রার পারদ ৪৫ ডিগ্রি পার করেনি। এই প্রথম ফ্রান্সের শহর গ্যালারুঁ-লে-মঁন্তু দেশের ইতিহাসে জায়গা করে নিল পারদ চড়ার নিরিখে। সেখানে তাপমাত্রার পারদ রেকর্ড হয়েছে ৪৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা শুনেই ফ্রান্সে বহু মানুষ ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হয়েছেন। এর আগে ফ্রান্সে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ২০০৩ সালে সেখানে তাপপ্রবাহ চলাকালীন এই উচ্চতায় পারদ চড়ে। তারপর থেকে ৪৪ ডিগ্রিও পার করেনি ফ্রান্স। এবার তা প্রায় পৌঁছে গেল ৪৬ ডিগ্রিতে।
ফ্রান্সে আগুনে গরমে ৪ হাজার স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষজন হাঁসফাঁস করছেন। এমন গরমের সঙ্গে তাঁরা অভ্যস্ত নন। ফলে কষ্ট চরমে উঠেছে। দেশ জুড়ে প্রশাসনের তরফে গরম নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কী করবেন, আর কী করবেন না, তা বিভিন্নভাবে প্রচার করা হচ্ছে। স্নানাগারগুলিকে মাঝরাতেও খুলে রাখা হচ্ছে। শুধু ফ্রান্স বলেই নয়, স্পেন, জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশ আগুনে গরমে পুড়ছে। তাপপ্রবাহ চলছে অনেক জায়গায়। মানুষজনকে দুপুরে বাড়ি থেকে বার হতেই মানা করা হচ্ছে। জুন মাসে এমন গরম এর আগে কখনও ইউরোপ প্রত্যক্ষ করেনি।
স্পেনে গরমের জেরে ক্যাটালোনিয়া এলাকায় এক বিধ্বংসী দাবানল জঙ্গলকে জঙ্গল গ্রাস করে নিচ্ছে। বিগত ২০ বছরে স্পেনে এমন ভয়ংকর দাবানল দেখা যায়নি। দমকলবাহিনী সবরকম চেষ্টা করেও আগুন আয়ত্তে আনতে পারছেনা। বরং প্রবল গরম আর শুকনো আবহাওয়ার জন্য আগুন খুব দ্রুত নতুন নতুন এলাকা গ্রাস করে নিচ্ছে। এদিকে হিট স্ট্রোকে স্পেনে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গরমে পুড়ছে ব্রিটেনের কিছু এলাকাও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা