
প্যারিসের গা দিয়ে বয়ে যাওয়া সেইন নদীকে এভাবে ফুঁসতে দেখেননি অনেকেই। গত ৩০ বছরে সেইন এত ভয়ংকর চেহারা নেয়নি। এবার সেটাই হল। শুক্রবার দু’কুল ছাপিয়ে সেইনের জল যেভাবে আশপাশের এলাকায় ঢুকতে শুরু করছে তাতে প্রমাদ গুনছে প্যারিস প্রশাসন। ইতিমধ্যেই বিখ্যাত লুঁভে মিউজিয়াম থেকে অমূল্য শিল্পকীর্তিগুলিকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বেশ কিছুকে বেসমেন্টে রাখা হয়েছে। সেইনের ধারে বসবাসকারীদের বিশেষভাবে সতর্ক করেছে প্রশাসন। যে কোনও মুহুর্তে তাঁদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে হতে পারে বলে আগাম সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সেইনের চেহারা আরও ভয়ানক হতে চলেছে বলেই মনে করছে প্যারিস প্রশাসন। কারণ আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে যে মন খারাপ করা একটানা বৃষ্টি বেশ কিছুদিন ধরে আস্তে আস্তে প্যারিসের জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে, সেই বৃষ্টি এখনই থামার কোনও সম্ভাবনা নেই। দক্ষিণ প্যারিসে ১ অশ্বারোহীকে প্রবল স্রোত টেনে নিয়ে যায় এদিন। ফুঁসতে থাকা নদীর জলে মৃত্যু হয় তাঁর। শুধু প্যারিস বলেই নয়, ফ্রান্সের বিস্তীর্ণ এলাকাই এখন একটানা বৃষ্টিতে বেহাল। ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে সে দেশের পরিবেশ মন্ত্রক। কারণ দেশের বহু গ্রাম জলের তলায় তলে গেছে। গ্রামের মধ্যে দিয়ে নদীর স্রোতের মত কাদামাটি ভেসে যাচ্ছে। গ্রামগুলির জল নামলে সেখান থেকে নতুন করে দেহ উদ্ধার অসম্ভব কিছু নয় বলেই আশঙ্কা করছেন তাঁরা। এই ভয়ংকর পরিস্থিতিতে দেশের আমজনতার ভোগান্তি বাড়াতে দোসর হয়েছে ৩ দিন ধরে চলা ট্রেন ধর্মঘট। ফ্রান্সের পাশাপাশি একটানা বৃষ্টিতে নাজেহাল পার্শ্ববর্তী জার্মানিও। জার্মানির বিভিন্ন শহর জলে থৈথৈ। এখনও পর্যন্ত বন্যার কবলে পড়ে জার্মানিতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।