শিবকে অসম্মানের হাত থেকে বাঁচালেন, বিসর্জন দিলেন নিজ অঙ্গের
এক সময় শিব ধ্যানস্থ অবস্থায় থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে কৈলাসে দেখা করতে যান পরশুরাম। শিবের আদেশে গণেশ দেখা করতে বাধা দিলেন পরশুরামকে।
শিবনন্দন গজাননের দেহটা মানুষের, মাথাটা হাতির। সম্পূর্ণ দেহের বিভিন্ন অংশ এক একটি আধ্যাত্মিক প্রতীক হিসাবে ধরা হয় যেমন – মাথা আত্মার প্রতীক। মানুষের অস্তিত্বের সর্বশেষ সত্যতা তথা পরমাত্মা। হাতির মতো মাথা এখানে জ্ঞানের প্রতীক।
গণেশের গলার পর থেকে মানুষের দেহ অর্থাৎ মায়া। মানুষের পার্থিব অস্তিত্বের প্রতীক। শুঁড় হল মহাজাগতিক সত্যতা অর্থাৎ ॐ-এর প্রতীক। যোগ্যতার সর্বোচ্চ পরাকাষ্ঠা।
উপরের ডান হাতের কুঠার সমস্ত পার্থিব বন্ধন থেকে মুক্ত করে শাশ্বত সনাতন সত্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতীক। বাঁ হাতে দড়ির ফাঁস বিভিন্ন কাঠিন্যকে বেঁধে ফেলে বাধাবিঘ্ন অপসারণের প্রতীক।
গণেশজি ভাঙা দাঁতটি কলমের মতো ধরে আছেন নিচের ডান হাতে। মহাভারত লেখার সময় দাঁতটি ভেঙে কলম হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন। পুরাণান্তরে আছে, পরশুরামের সঙ্গে যুদ্ধের সময় কুঠারাঘাতে গণেশের একটি দাঁত উৎপাটিত হয় সমূলে।
এক সময় শিব ধ্যানস্থ অবস্থায় থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে কৈলাসে দেখা করতে যান পরশুরাম। শিবের আদেশে গণেশ দেখা করতে বাধা দিলেন পরশুরামকে। বাধা দিতে উভয়ের মধ্যে বেধে যায় যুদ্ধ। যুদ্ধ চলাকালীন পরশুরাম ছোঁড়েন পরশু (শিবের কুঠারকে পরশু বলে)।
পার্বতীপুত্র পিতা মহাদেবের সম্মানরক্ষার্থে অস্ত্র ব্যর্থ হতে দিলেন না। নিজের দাঁতের উপরে আঘাত নিলেন। একটি দাঁত ভেঙে যায় পরশুর আঘাতে। সেই থেকে শিবনন্দন এই ত্যাগস্বীকারের জন্য তিনলোকে সুখ্যাত হলেন একদন্ত নামে। দাঁতটিকে ধরা হয় ত্যাগের প্রতীক।