মকরসংক্রান্তি। সারা দেশেই দিনটার মাহাত্ম্য সুপ্রাচীন। পৌষ মাসের শেষ দিনটায় গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ হাজির হন সাগরে। সাগরে এত মানুষের সমাগমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার সুবন্দোবস্ত করেছে রাজ্য সরকার। রাত কাটানোর টেন্ট থেকে পর্যাপ্ত আলো। শান্তি বজায় রাখা থেকে মানুষের পাশে থাকা। গোটা এলাকার পরিচ্ছন্নতা থেকে শৌচাগারের ব্যবস্থা। সবই হয়েছে সুন্দর করে। নজর রাখা হয়েছে যাতায়াতে, নজর রাখা হয়েছে পুণ্যার্থীদের সুরক্ষায়। শনিবার ভোররাত থেকেই সাগরে শুরু হয়েছে পুণ্যস্নান। স্নান সেরে কপিল মুনির আশ্রমেও ভিড় জমাচ্ছেন মানুষজন। কত মানুষ! কত তাঁদের আশা! কত মানত! কত কষ্ট! সাগরে যথার্থই এক মিলন স্থল। সেখানে বহু মানুষ ফিরে পেয়েছেন তাঁর হারানো অতীতকে! কথায় বলে সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার! সাগরের তীরে এই মহামিলনোৎসবে মানুষের চোখে মুখে সেই অনুভূতি ফুটে উঠছে বারবার। একটা ডুব যেন ধুয়ে দিচ্ছে সব দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা, পাপ! এ এক মহা বিশ্বাস। আর সেই বিশ্বাসে ভর করে দেশের কোণা কোণা থেকে নামমাত্র সম্বল হাতে কত শত মানুষ হাজির এখানে। এবার যদিও নোট বাতিলের জেরে গঙ্গাসাগরে নগদে টান। ইচ্ছাপূরণের প্রয়োজনীয় অর্থ অনেকের পকেটেই নেই। তাতে কী! বিশ্বাস আছে, ভরসা আছে, সাগরের জল স্পর্শের চরম অনুভূতি আছে! এই বা কম কী! আর সেই বিশ্বাসেই ভর করে লাখো মানুষ গঙ্গাসাগরে ভিড় জমান এদিন। এটাই ভারত! যেখানে পুণ্যের খোঁজে ধনী, দরিদ্র মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সাগরের জলে।