মুখ নয়, চোখ দিয়ে অবাক জলপান
জলপানের লম্বা ফিরিস্তিতে প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়েছিল অবাক জলপান নাটকের পথিকের। সেই তালিকায় এবার নতুন সংযোজন চোখ দিয়ে জলপান।
জল কতরকমভাবে পান করা যায়? তাই নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড লিখেছিলেন সুকুমার রায়। জল পানের লম্বা ফিরিস্তিতে প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়েছিল ‘অবাক জলপান’ নাটকের পথিকের। সেই তালিকায় এবার নতুন সংযোজন চোখ দিয়ে জলপান।
মুখ নয়, বড় বড় দুটো চোখ চেটেও দিব্যি জলপান করা যায়! নামিবিয়ার মরুপ্রদেশের এক প্রকারের বাসিন্দা তারই প্রমাণ। নাম তার ‘পালমেত্তো গেকো’।
বালির বিশাল সাম্রাজ্যে গোলাপি রঙের এই মিষ্টি সরীসৃপের ঘর। সূর্য আকাশে তেড়েফুঁড়ে ওঠার আগেই জলপানের পর্ব সাঙ্গ করে ফেলে গেকোর দল। কারণ, সারাদিন তারপর আর জল কপালে জোটে না তাদের।
গেকোর এমন অদ্ভুত জলপানের রহস্য জানতে উঠে পড়ে লাগেন জীববিজ্ঞানীরা। গবেষণায় দেখা যায়, মরুভূমির বাসিন্দা গেকোর গায়ের রং হাল্কা গোলাপি। খুবই স্বচ্ছ তার ত্বক। সেই কারণে সূর্যের প্রখর তেজ একদম সহ্য করতে পারেনা গেকোরা।
সূর্য মাথার ওপর উঠতেই আলো এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয় ছোট্ট সরীসৃপের শরীর। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হাত পা ছড়িয়ে মরুভূমির বুকে ঘুরে বেড়ায় গেকোরা। ভোরের আলো ফোটা থেকে শুরু করে সকাল ৯টা অবধি সেই সময়।
ভোরের দিকে গরম বাতাস আর মরু সংলগ্ন আটলান্টিক মহাসাগরের নোনা হাওয়া মিলিত হয়ে তৈরি করে ঘন কুয়াশার চাদর। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেই কুয়াশার জাল ছিন্ন হয়। ধীরে ধীরে জলকণা ঝরে পড়তে থাকে মরুপ্রদেশের বুকে।
সেইসময় চাতক পাখির মত আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে গেকো। তার বড় বড় দুচোখে নেমে আসে বিন্দু বিন্দু জলকণা। সেই জল বাষ্পীভূত হওয়ার আগেই চটপট চোখ চেটে তেষ্টা মিটিয়ে নেয় গেকোরা। সূর্য উঠতেই তারপর বালির তলায় দেয় ডুব। অবাক জলপান শেষ। এরপর সূর্যাস্ত অবধি চলে গেকোদের লম্বা ঘুম।