দক্ষিণের তাজমহল প্রেমিকার জন্য নয়, নিজের জন্য বানিয়েছিলেন সম্রাট
তাজমহল তৈরি করেছিলেন শাহজাহান। তাঁর স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতিতে তাজমহল তৈরি করেন তিনি। কিন্তু দক্ষিণের তাজমহল বিখ্যাত সম্রাট তাঁর নিজের জন্য তৈরি করেছিলেন।
বাবার মৃত্যুর পর কর্ণাটকের বীজাপুরের সুলতান হন মহম্মদ আদিল শাহ। তখন তাঁর মাত্র ১৫ বছর বয়স। কিশোর রাজা রাজ্যপাট সামলানোতে আরও দক্ষ হয়ে ওঠায় মন দেওয়ার পাশাপাশি মৃত্যু নিয়ে চিন্তা করতেন। ১৫ বছরের এক কিশোরের ক্ষেত্রে যা বেমানান হলেও মহম্মদ আদিল শাহ সেই বয়সেই তাঁর মৃত্যু ও তারপরটি ভেবে ফেলেছিলেন।
তিনি সিংহাসনে বসার কিছুদিন পর নির্দেশ দেন তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে যেন সেই স্থানে কবর দেওয়া হয় যেটি তিনি তৈরি করে যাচ্ছেন। মহম্মদ আদিল শাহর ভয় ছিল যে তাঁর মৃত্যুর পর খুবই অবহেলায় কোথাও তাঁর দেহ কবর দিয়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন এক রাজকীয় কবরস্থান। তাই তিনি একটি অতিকায় গোলাকার গম্বুজ নির্মাণ শুরু করেন।
শুরু হয় বিখ্যাত গোল গম্বুজ তৈরি। যা সম্পূর্ণ হওয়ার পর তাকে দক্ষিণ ভারতের তাজমহল বলে ডাকা হতে থাকে। তবে তাজমহল শাহজাহান তৈরি করেছিলেন তাঁর তৃতীয় কিন্তু প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে।
দক্ষিণের তাজমহল গোল গম্বুজ কিন্তু বীজাপুরের আদিল শাহি সাম্রাজ্যের সপ্তম শাসক সুলতান মহম্মদ আদিল শাহ নিজের কবরস্থান হিসাবে নির্মাণ করেন। যা এখন শুধু পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণই নয়, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এক গোলাকার কবর।
তবে এই গোল গম্বুজ এক দর্শনীয় স্থানে রূপান্তরিত হলেও এটি কিন্তু সম্পূর্ণ তৈরি করা যায়নি। কিছুটা কাজ বাকি থাকতেই মহম্মদ আদিল শাহর মৃত্যু হয় ১৬৫৬ সালে। কিন্তু তাঁর ইচ্ছা মেনে তখন ওই গোল গম্বুজেই তাঁর দেহ কবর দেওয়া হয়েছিল।