তিনি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার প্রথম মহিলা অনার্স গ্র্যাজুয়েট। তিনি কবি। তিনি সমাজকর্মী। তিনি নারীবাদী এক প্রতিবাদী মুখ। তিনি কামিনী রায়। যে বঙ্গ তনয়াকে আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে গোটা বাংলা, গোটা দেশ। যিনি লেখনী ধরেছিলেন ‘জনৈক বঙ্গমহিলা’ ছদ্মনামে। শনিবার ছিল বাংলার গর্ব সেই কামিনী রায়ের ১৫৫ তম জন্মবার্ষিকী। যে দিনটাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করল গুগল ডুডল। যাঁদের স্মৃতি থেকে এই মানুষটির কর্মকাণ্ড, নাম মুছে যেতে বসেছিল তাঁরাও এদিন গুগল খুললেই সামনে ভেসে উঠল কামিনী রায়ের নাম।
পারিবারিক দিক থেকে অত্যন্ত স্বনামধন্য মানুষকে পাশে পেয়েছিলেন তিনি। কামিনী রায়ের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের বাসন্ডা গ্রামে ১৮৬৪ সালে। তাঁর পিতা চণ্ডীচরণ সেন ছিলেন ঐতিহাসিক ও বিচারক। তিনি ১৮৭০ সালে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন। পরে স্ত্রী ও কন্যাকেও ব্রাহ্ম ধর্মে দীক্ষিত করেন। তখন কলকাতায় চলে আসেন কামিনী রায়। তাঁর পিসি ছিলেন বিখ্যাত মহিলা চিকিৎসক যামিনী রায়।
কলকাতার বেথুন স্কুলে তিনি শিক্ষা লাভ করেন। পরে বেথুন কলেজ থেকে সংস্কৃত ভাষায় অনার্স গ্র্যাজুয়েট হন। ১৮৮৬ সালে যখন তিনি স্নাতক হন তখন অনেক মহিলা স্নাতক হওয়ার কথা মনেও আনতেন না। স্নাতক হওয়ার পর বেথুন স্কুলেই পড়ানো শুরু করেন কামিনী রায়। তারপর বেথুন কলেজে অধ্যাপনা করেন। কামিনী রায়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা ছিল বাড়িতে পড়াশোনার পরিবেশ ও তাঁর বাবা-মা দুজনের তাঁকে শিক্ষিত করে তোলার প্রচেষ্টা।
ছোট থেকেই কবিতা লেখার প্রতি ছিল তাঁর ঝোঁক। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ আলো ও ছায়া। তারপর নির্মাল্য, পৌরাণিকী, মাল্য ও নির্মাল্য, দীপ ও ধূপ, একলব্য সহ অনেকগুলি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তাঁর কবিতাকে ভালবেসে তাঁকে বিয়ে করেন সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়। শেষ জীবনে হাজারিবাগে কাটাতেন কামিনী রায়। ১৯৩৩ সালে মৃত্যু হয় বাংলার এই সোনার মেয়ের। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা