আজ ভারতীয় রেনেসাঁর জনক রাজা রামমোহন রায়ের ২৪৬ তম জন্মবার্ষিকী। যিনি মানুষের মনে চিরকাল বেঁচে থাকবেন তাঁর সতীদাহ প্রথা রদের অদম্য উদ্যোগের জন্য। যাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সমাজের বিরুদ্ধে প্রবল লড়াইয়ে একসময়ে ইংরাজরা আইন করে পৈশাচিক সতীদাহ প্রথায় দাঁড়ি টানতে সমর্থ হয়। বাংলার এই মহান সন্তানের নামটা মনে থাকলেও তাঁর জন্মদিবস বা মৃত্যুদিন অনেকেরই অজানা। এদিন গুগল না মনে করালে আমজনতা জানতেও পারতেন না দিনটার মাহাত্ম্য। সেজন্য হয়তো বঙ্গবাসীর তরফ থেকে গুগলের একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য। এক পুরাতনি ঘরানার ছবির মধ্যে দিয়ে সময়টাকেও ধরার চেষ্টা করেছে গুগলের ডুডলের অনুপম চিত্র।
সতী প্রথা রদের জন্য রাজা রামমোহন রায়কে সকলে একডাকে চিনলেও সমাজে তাঁর অবদান কিন্তু শুধু সতীদাহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যেই থেমে থাকেনি। ১৭৭২ সালের ২২ মে মুর্শিদাবাদের রাধানগর গ্রামে রামমোহনের জন্ম। গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম হলেও রামমোহন কম বয়স থেকেই স্বাধীন আধুনিক চিন্তাভাবনা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান হয়েও ছোট থেকে পৌত্তলিকতার প্রবল বিরোধী ছিলেন তিনি। যা তাঁর পরিবার কোনওদিন মেনে নিতে পারেনি। ফলে বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে কম বয়সেই তিনি হিমালয় ও তিব্বত ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। পরে ফিরে এলে বিয়ে দিয়ে তাঁর মন পরিবর্তনের চেষ্টা করে তার পরিবার। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি।
আধুনিক ভারতের রূপকার রাজা রামমোহন রায় ধর্মের নামে সমাজের কিছু মানুষের যথেচ্ছাচারে লাগাম দিতে ১৮২৮ সালে তৈরি করেন ব্রাহ্ম সমাজ। নানা ভাষায় পারদর্শী রামমোহন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের ভাবনা চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হন। যা তাঁকে চিরকাল সময়ের চেয়ে এগিয়ে ভাবতে ও সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে সাহায্য করেছিল।