গুরু পূর্ণিমায় কী করলে ঈশ্বর সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন
এই পূর্ণিমাকে যেমন ব্যাস পূর্ণিমা বলে, তেমনই গুরু পূর্ণিমাও বলে। গুরু পূর্ণিমায় কী করলে ঈশ্বর সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন।
আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার দিন সমস্ত সম্প্রদায়ের ভক্ত বা শিষ্যরা কেন নিজ নিজ গুরুকে পুজো করেন? আষাঢ়ী পূর্ণিমায় ব্যাসদেবের জন্ম হয়েছিল বলে এই পূর্ণিমাকে যেমন ব্যাস পূর্ণিমা বলে, তেমনই গুরু পূর্ণিমাও বলে। ধরা হয়ে থাকে ব্যাসদেব সকলের গুরু। সেজন্য আষাঢ় মাসের এই পূর্ণিমাতে সমস্ত সম্প্রদায় ব্যাসদেবেরই পুজো করে থাকে নিজ নিজ গুরুতে।
ব্যাসদেব বলেছেন ঈশ্বরই আদিগুরু। ঈশ্বরই সর্বপ্রথম সৃষ্টিতে আষাঢ়ী পূর্ণিমার দিন আবির্ভূত হয়েছিলেন গুরু রূপে। সংসারীদের জ্ঞানোপদেষ্টা গুরু রূপে উদ্ধারের জন্য তিনি আবির্ভূত হয়ে শিষ্যদের এমনভাবে গুরুশক্তির সঞ্চার করেছেন যাতে অনন্তকাল পর্যন্ত ওই গুরুশক্তি শিষ্যে সঞ্চারিত হয় ধারাক্রমে। সেই শিষ্য তত্ত্বজ্ঞান উপদেশের মাধ্যমে জীবসমূহকে উদ্ধার করতে পারেন গুরুরূপে। সেইজন্য এই দিনটিকে বলা হয় গুরু পূর্ণিমা।
নির্দিষ্ট তিথিতে তিথিতে নৃসিংহাদির আবির্ভাবের জন্য নৃসিংহ চতুর্দ্দশী, বামন দ্বাদশী, রামনবমী, সীতানবমী, কৃষ্ণাষ্টমী, রাধাষ্টমী, বুদ্ধপূর্ণিমা, গৌরপূর্ণিমা ইত্যাদি নাম হয়েছে; তদ্রূপই আদিগুরুর আবির্ভাব আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে হওয়ায় একে গুরু পূর্ণিমা বলা হয়।
আর আদিগুরু সেই ঈশ্বরই ধারাক্রমে বিভিন্ন গুরুদেহে বর্তমান থেকে গুরু হয়ে আসছেন বলে গুরুপ্রণামে বলা হয়, “গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু, গুরু দেব মহেশ্বর / গুরু সাক্ষাত পর্ ব্রহ্মা, তষ্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ”।
এর অর্থ, জীবনে গুরুই হলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর। গুরুই সাক্ষাত পরম ব্রহ্ম। তিনিই আমাদের পরম ব্রহ্মজ্ঞান দান করেন। এই বাক্যের দ্বারা প্রত্যেক শিষ্যই তাঁর গুরুকে পরমব্রহ্ম রূপে প্রণাম করে থাকেন।