বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই রোগে ভুগছিলেন। হার্টের সমস্যা ছিল। কিডনিরও সমস্যা ছিল। ২০১৭ সালে এই প্রবীণ শ্রমিক নেতা এআইটিইউসি-র নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। তাঁর শরীর ভাল ছিলনা। গত অগাস্টে চেতলায় নিজের বাড়িতে পড়ে যান তিনি। ভর্তি হন একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গত সোমবারই তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভোরে এই বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সিপিআই-এর বর্ষীয়ান নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত। একাধারে বামপন্থী ভাবধারায় বিশ্বাস। সিপিআই নেতা। শ্রমিক নেতা। সফল সাংসদ। লোকসভা, রাজ্যসভা ২ কক্ষেই তিনি তাঁর বাগ্মিতা ও বামপন্থী আদর্শের ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বামপন্থী শ্রমিক আন্দোলনের একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি হল বলেই মনে করছেন অনেকে।
১৯৮৫ সালে প্রথম রাজ্যসভার সাংসদ হন। তারপর ১৯৮৮ ও ১৯৯৪ সালেও রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০০ সালে পাঁশকুড়া থেকে উপনির্বাচনে হেরে যান। কিন্তু সেই পাঁশকুড়া থেকেই ৪ বছর বাদে লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। ২০০৯ সালে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। ২ বার তিনি লোকসভার সাংসদ হন।
রাজ্যসভার সাংসদ থাকাকালীন যেমনভাবে তিনি বোফর্স নিয়ে কড়া ভাষায় সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন, তেমনই আবার মনমোহন সিং সরকারের ২জি স্পেকট্রাম বিতর্ক নিয়েও সমানভাবে সরব হন গুরুদাস দাশগুপ্ত। তাঁর বক্তব্যে বারবার প্রকাশ পেয়েছে পুঁজিবাদ, নয়া সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ। নিজের বামপন্থী আদর্শকে তাঁর বক্তব্যে বারবার সামনে আনার চেষ্টা করেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে রাজ্যের বামপন্থী রাজনীতিতে আরও একটা শূন্যস্থান তৈরি হল বলেই মনে করছেন অনেকে।