ফেলে দেওয়া শাঁসের কামালে মুগ্ধ গবেষকরা
বীজ কাজে লাগে। ফেলে দেওয়া হয় ফলের বাকি অংশ। কিন্তু তার যে এমন গুণ তা কে জানত! যার হদিশ দিলেন কয়েকজন গবেষক।
নিউ ইয়র্ক : চা-এর পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে আর এক জনপ্রিয় পানীয় হল কফি। কফির অপূর্ব সুগন্ধ আর স্বাদে মুগ্ধ বিশ্ববাসী। ক্লান্তি দূর করে শরীরকে তরতাজা করে তুলতেও কফির জুড়ি মেলা ভার। কফি ফলের ভিতরে যে বীজটি থাকে সেটিকেই কফি বিন বলে। এর থেকেই অপূর্ব স্বাদ ও গন্ধের কফি পাওয়া যায়।
কফি চাষ করার পর কফি ফলগুলির ভেতর থেকে বীজগুলোকে বের করে নেওয়া হয়। ফলের বাদবাকি অংশ কোনও কাজেই আসে না। এই বিপুল পরিমাণ কফি শাঁসের তাহলে কী হয়? কথায় বলে বিশ্বের কিছুই ফেলা যায়না। সেই তত্ত্ব ফের একবার প্রমাণ করল একটি গবেষণা।
সম্প্রতি জানা গেছে কফি বীজ ফলের থেকে আলাদা করে ফেলার পর পড়ে থাকা ফলের শাঁসটি, যেটি এতদিন সেভাবে গুরুত্ব পেত না, সেটিই ভীষণভাবে কাজে লাগতে পারে বনাঞ্চল বৃদ্ধি করার জন্য। চাষাবাদের পর পড়ে থাকা জমিতে হাতে কলমে পরীক্ষা করে ফল দেখে অবাক হয়ে গেছেন গবেষকরা।
ইকোলজিক্যাল সলিউশনস অ্যান্ড এভিডেন্স নামে জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। সেখানেই বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে এই পরীক্ষাটি সম্পর্কে।
৩৫ থেকে ৪০ মিটারের অনাবাদী জমিতে গবেষকরা ৩০টি ট্রাক ভর্তি কফির বর্জ্য ফেলেন। এবং তেমনই দৈর্ঘ্যের আরও একটি পড়ে থাকা জমি চিহ্নিত করেন তাঁরা। সেই জমিতে কিছু ফেলা হয়নি। ২ বছর ধরে দুটি জমি পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা।
দেখা যায় যে জমিতে তাঁরা কফির বর্জ্য ফেলেননি সেখানে ঘাস গজানো ছাড়া আর কিছুই হয়নি। কিন্তু যে জমিতে পুরু করে কফির শাঁস ফেলা হয়েছিল সেই জমিটি আর চেনাই যাচ্ছে না। কারণ পুরো জায়গাটাই ভরে গেছে ঘন গাছপালায়। এমন পরিবর্তন দেখে চমকে গেছে গবেষকদের দলটি।
কফির শাঁস ফেলা জমিটির গাছগুলি ফাঁকা জমিটির ঘাসের তুলনায় চারগুণ উঁচু হয়েছে ২ বছরেই। তারসাথে জমিটিকে গাছ ৮০ শতাংশ ঢেকে দিয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ ঢেকেছে ঘাসে।
এমনকি কফির পুরু আস্তরণ ওই জমিটিতে ঘাস হতে বাধা দিয়েছে, এই ঘাসগুলি অন্যান্য বড় গাছ হতে বাধা দেয়। ওই জমিটিতে গজিয়ে ওঠা গাছের বীজগুলি আদি প্রাকৃতিক নিয়মে হাওয়া ও পশুপাখির বর্জ্য থেকেই এসেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা