উজ্জ্বল কাঁচা হলুদ শুধু রূপচর্চায় নয়, শরীরের নানা ব্যাধি নির্মূল করতেও অব্যর্থ। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে কাঁচা হলুদের মূল্য অপরিসীম। বর্তমান অ্যালোপ্যাথি বা হোমিওপ্যাথির যুগেও হলুদের কার্যকারিতা অস্বীকার করার জায়গাই নেই। আসুন জেনেনি, ত্বকের সুরক্ষা ছাড়াও শরীরকে নীরোগ রাখতে কাঁচা হলুদ খাওয়া কেন উপকারি।
হলুদের মধ্যে আছে রাসায়নিক পদার্থ কারকিউমিন। এই উপাদান শরীরে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। হলুদের মধ্যে ফিনোলিক যৌগিক কারকিউমিন রয়েছে। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সর্দি-কাশিতে হলুদ একপ্রকার মহৌষধি বলা যায়। কাশি কমাতে এক টুকরো কাঁচা হলুদ মুখে রাখা যায়। এছাড়া, এক গ্লাস গরম দুধে হলুদ ও গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেলেও উপকার মেলে। গা-হাত-পা ব্যথায় দুধে একটু হলুদ মিশিয়ে খাওয়া যায়।
আয়ুর্বেদিক মতে, হলুদ রক্ত পরিশুদ্ধ করে। কাঁচা হলুদ ইনসুলিন হরমোনের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও অগ্ন্যাশয়কে সুস্থ রাখে। কাঁচা হলুদ হার্ট ভাল রাখে।
হলুদ জীবাণু থেকে দাঁতকে রক্ষা করে। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া ও মুখের ভেতরে ক্ষত সারাতে কাঁচা হলুদ নিয়ম করে খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা হলুদ রক্তাল্পতার হাত থেকে বাঁচায়। হলুদে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় তা রক্তে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে।
হলুদ অনেকসময় স্মৃতিশক্তি বিলোপ রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে। দেখা গেছে, নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খেলে এই রোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে। হাঁপানি, হেপাটাইটিস, থাইরয়েড, মূত্রনালির প্রদাহ ইত্যাদি রোগে হলুদ কার্যকরী ওষুধ। মাথাব্যথা, অনিদ্রা, বাতের ব্যথা, দুশ্চিন্তা, অ্যালার্জি, কোলেস্টেরল ইত্যাদি কমাতে কাঁচা হলুদের উপকারিতা অপরিসীম।
তবে কাঁচা হলুদ খুব সুস্বাদু কিছু নয়। ফলে তা খাওয়ার সময় মুখে ভাল নাও লাগতে পারে। তাই কাঁচা হলুদের টুকরো আখের গুড় বা চিনি দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। যাদের হলুদে অ্যালার্জি আছে, তাদের জন্যও কাঁচা হলুদ অনেকসময় নিরাপদ নয়।