করোনাকে দূরে রাখছে প্রাচীন ভারতীয় ক্রিয়া, দাবি চিকিৎসকের
জল নেতি করলে দূরে থাকবে করোনা। এমনই দাবি করলেন রাজস্থানের এক বক্ষ বিশেষজ্ঞ। শরীর সুস্থ রাখার জন্য জল নেতি একটি প্রাচীন ভারতীয় ক্রিয়া।
জয়পুর : রোগকে আগে থেকে প্রতিরোধ করা রোগ হওয়ার পর চিকিৎসা করার চেয়ে অনেক বেশি ভালো। ভারতবর্ষে প্রাচীনকাল থেকেই শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নানা ধরনের ক্রিয়া, যোগাভ্যাস ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে এসেছে।
এমনকি এই অতিমারির সময়ও চিকিৎসকরা ভরসা করছেন প্রাচীন ক্রিয়া ‘জল নেতি’-এর ওপরে। এই জল নেতি মানুষকে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ থেকে অনেকটাই রক্ষা করতে পারে বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন।
কি এই জল নেতি? জল নেতি হল ঈষদুষ্ণ নুন মেশানো জল একটি নাসারন্ধ্র দিয়ে ঢুকিয়ে অপর নাসারন্ধ্র দিয়ে বের করার প্রক্রিয়া। করোনা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে নাক ও গলাকে সংক্রমিত করে। তাই নাককে জীবাণুমুক্ত রাখা জরুরি।
নাকের ভিতরের অংশকে পরিস্কার করার ভীষণই উপযোগী প্রক্রিয়া হল এই জল নেতি। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা এই ক্রিয়াটিকে জীবনের অঙ্গ বানিয়ে ফেলেছেন। তার ফলও পেয়েছেন হাতেনাতে।
রাজস্থানের একটি হাসপাতালের বক্ষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বীরেন্দ্র সিং জানিয়েছেন হাসপাতালে ১০০ জন কর্মী কোভিড ওয়ার্ডে কাজ করেন। আর বাকি ২০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করেন নন-কোভিড ওয়ার্ডে। কোভিড ওয়ার্ডে যাঁরা কাজ করেন স্বাভাবিকভাবে তাঁদের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু এক্ষেত্রে উল্টো ঘটনা ঘটেছে।
এক্ষেত্রে দেখা গেছে যেখানে কোভিড ওয়ার্ডে একজন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানে নন-কোভিড ওয়ার্ডে আক্রান্ত কর্মীর সংখ্যা ২০। কারণ কোভিড ওয়ার্ডের কর্মীরা জল নেতি ক্রিয়া করেন। বাকিরা তা করেন না।
তাঁদের ঝুঁকি কম বলে তাঁরা নিজেদের জল নেতি করা থেকে বিরত রেখেছিলেন। চিকিৎসক বীরেন্দ্র সিংয়ের দাবি, কোভিড ওয়ার্ডের কর্মীরা জল নেতি করার ফলেই সেখানে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ কম হয়েছে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত জার্নাল ‘লাং ইন্ডিয়া’-য় জয়পুরের সোওয়াই মানসিং মেডিক্যাল কলেজের বক্ষ বিশেষজ্ঞ শীতু সিং-এর একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে শীতু সিংও নুন-জলে গারগল ও জল নেতিকে প্রাথমিকভাবে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি উপযোগী পদ্ধতি হিসাবে দাবি করেছিলেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা