এবার বোধহয় বলা যেতেই পারে মা হওয়ার কোনও বয়স হয়না। একদম সরাসরি বিজ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ। প্রচলিত ধারণায় কুঠারাঘাত। ৭৪ বছরে যদি কোনও মহিলা, থুড়ি বৃদ্ধা সুস্থ যমজ সন্তানের জন্ম দিতে পারেন তাহলে বুক ফুলিয়ে বলা যায় মা হওয়ার কোনও বয়স হয়না। এমনই চমকে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটল অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে। মাঙ্গাম্মার যমজ সন্তান হল সিজার করে।
যে চিকিৎসক এই সিজারটি করেন সেই এস উমাশঙ্করের কাছে এটা একটা মিরাকল। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মিরাকল। মাঙ্গাম্মাই বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্কা জন্মদাত্রী বলেও দাবি করেন উমাশঙ্কর। পাশাপাশি তিনি সকলকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, মা ও ২ সন্তান ভাল আছে। তিনি আরও জানান আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানসম্ভবা হন মাঙ্গাম্মা। এর আগে ৭০ বছরেও মা হওয়ার উদাহরণ রয়েছে। হরিয়ানার দলজিন্দর কৌর ২০১৬ সালে এক সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তার পর থেকে তিনিই ছিলেন বিশ্বের সর্বজ্যেষ্ঠ জন্মদাত্রী। সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন মাঙ্গাম্মা।
মাঙ্গাম্মা জানিয়েছেন তিনি ভীষণ খুশি। সন্তান কোলে পাবেন এমন আশা তিনি ও তাঁর স্বামী কার্যত ছেড়েই দিয়েছিলেন। তাঁদের বিয়ে হয়েছে ৫৪ বছর হল। কিন্তু শত চেষ্টা করেও মা হতে পারেননি মাঙ্গাম্মা। অবশেষে তিনি ও তাঁর স্বামী রাজা রাও আইভিএফ পদ্ধতির আশ্রয় নেন। আর তাতেই আসে সাফল্য। ৭৪ বছর বয়সে মা হলেন মাঙ্গাম্মা।
এই মিরাকলে চিকিৎসকদের অবদানও অনস্বীকার্য। সাহস দেখিয়েছিলেন মাঙ্গাম্মা। আর তাঁকে সম্মান জানিয়ে দিনরাত এক করে দিলেন ৯ জনের একটি চিকিৎসকদের দল। তাঁরা ৩টি গ্রুপ করে নিয়ে শেষ ৯ মাস মাঙ্গাম্মাকে একটানা পর্যবেক্ষণে রাখেন। নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হত। তাঁর খাবার একদম রুটিন করে দেওয়া হত। এমনকি প্রচলিত প্রথা মেনে সন্তানসম্ভবা মাঙ্গাম্মার সাধ দেওয়ার ইচ্ছা চিকিৎসকদের জানাতে তাঁরা তাতে সায় দেননি। তবে সাধ হয়েছে। মাঙ্গাম্মাকে সিজারের জন্য নিয়ে যাওয়ার আগে নার্সিং হোমেই বিশেষ বন্দোবস্ত করে তাঁর সাধ হয়। তার কিছু পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। এদিকে মাঙ্গাম্মার মা হওয়ার খুশিতে তাঁর পরিবারের আনন্দ বাঁধ ভেঙেছে। গোটা এলাকাকে মিষ্টি খাইয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারের লোকজন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা