৬ অগাস্ট, ১৯৪৫। বিশ্বজুড়ে তখন চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যদিও তার বড় একটা প্রভাব জাপানের হিরোশিমা শহরে ছিলনা। সেখানে ওদিন সকাল হয়েছিল স্বাভাবিকভাবেই। আর পাঁচটা দিনের মতই সবে শুরু হয়েছিল কর্মব্যস্ততা। এমন সময় নীল আকাশের বুকে উড়ে এল মার্কিন বোমারু বিমান। সেই বোমারু বিমান থেকে নেমে এল বোমার আকারে মানবসভ্যতার জন্য এক অভিশাপ। এই দিনটাতেই জাপানের হিরোশিমা শহরে ‘লিটল বয়’ নামে পরমাণু বোমা ফেলে আমেরিকা। ৩ দিন পর বোমা ফেলা হয় নাগাসাকিতেও। মারা যান প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ। যে ঘটনার কথা বলতে গিয়ে আজও জাপান বলে নয়, অনেক দেশের মানুষই শিউরে ওঠেন।
সেই ভয়ংকর ঘটনার ৭৪ বছর পূর্ণ হল এদিন। দিনটা জাপানের মানুষের কাছে অত্যন্ত শোকের দিন। পরমাণু বোমায় মৃতদের আত্মার শান্তি কামনায় ফুল দিয়ে তাঁদের শ্রদ্ধা জানানো হয় হিরোশিমার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে। হিরোশিমার ওপর আমেরিকা ‘লিটল বয়’ ফেলেছিল স্থানীয় সময় সকাল সওয়া ৮টায়। ঠিক সেই সময়েই হিরোশিমা মেমোরিয়ালে এদিন অনুষ্ঠিত হয় একটি প্রার্থনা। পালন করা হয় নীরবতা। হিরোশিমায় পরমাণু বোমাতেই শান্ত হয়নি আমেরিকা। ৩ দিন পর ৯ অগাস্ট নাগাসাকি শহরেও একইভাবে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এর ঠিক ৬ দিন পর আত্মসমর্পণ করে জাপান। শেষ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
মঙ্গলবার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর হিরোশিমা শহরের মেয়র জাপান সরকারের কাছে আবেদন জানান জাপান যেন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই করে। পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার ডাক দেন মেয়র। তিনি বলেন, জাপানই বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা পরমাণু অস্ত্রের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছে। জাপান জানে কী ভয়ংকর পরিণতির মুখে পড়তে হয় মানবসভ্যতাকে। তাই জাপানকেই এগিয়ে আসতে হবে বিশ্বকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার জন্য। জাপানের নেতাদের এ বিষয়ে আরও উদ্যোগী হতে হবে। যদিও পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করা প্রসঙ্গে এর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও উদ্যোগ নেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা