সেলফি না হলে হোলি খেলা হল কই
রঙ খেলে সেই রঙ মাখা মুখটার সেলফি তুলে সোশ্যাল সাইটে দেওয়া হোক বা হোয়াটসঅ্যাপের ডিপি, সবেতেই দোলের সময় চাই একটা রঙিন মুখ।
গালের বাঁ দিকটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। ভাল আসছে না। একটু কনট্রাস্ট করে হলুদ আবিরটা লাগিয়ে দে তো! দেখিস তাড়াহুড়ো করে থুতনির কাছের নীল রংটার ওপর আবার চড়িয়ে দিসনা যেন!
এক সুসজ্জিতা তরুণীকে তার বান্ধবীর কাছে এভাবে রঙ মাখতে চাওয়া দেখে কিছুটা অবাক হলাম। বোঝার চেষ্টা করলাম এমন বলে কয়ে ডেকে ডুকে মাপা হোলির আসল কারণটা কী? বুঝলাম কিছুটা পরে।
হোলিতে রঙ খেলা বোধহয় সকলের কাছে নিছক দোল উৎসবে সামিল হওয়ার আনন্দই শুধু নয়। তার সঙ্গে আনুষঙ্গিক আরও কিছু। অবশ্য সেটা বোধহয় নব্য প্রজন্মের কাছেই সবচেয়ে বেশি। কারণটা সেলফি।
রঙ খেলে সেই রঙ মাখা মুখটার সেলফি তুলে সোশ্যাল সাইটে দেওয়া হোক বা হোয়াটসঅ্যাপের ডিপি, সবেতেই দোলের সময় চাই একটা রঙিন মুখ। সেকথাও হোলির সময়ে মাথায় রাখছে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। সঙ্গে আছে মেকআপ।
আগে দোল খেলার জন্যই একটি নষ্টপ্রায় প্যান্ট, জামা সযত্নে রাখা থাকত আলমারিতে। হোলিতে রঙ খেলে ওটা ফেলে দেওয়াই ছিল রীতি। মেয়েদের ক্ষেত্রেও তাই। রঙ চটা সালোয়ার কামিজ বা বিবর্ণ শাড়ি রাখা থাকত। দোল খেলার পর স্নান সেরে তবে সাজগোজ। এখন সেই পোশাক ব্যাকরণ বদলেছে। এখন রীতিমত মেকআপ করে সুন্দর শাড়িতে বসন্ত উৎসবে সামিল হচ্ছেন মেয়েরা।
ভাল পাঞ্জাবীতে সামিল হচ্ছেন পুরুষরাও। তারপর মেতে উঠছে হোলির রঙয়ে। সঙ্গে টপাটপ উঠছে সেলফি। ঝপাঝপ পড়ছে লাইক! এটাকে তির্যক চোখে দেখবেননা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই বদলায়। নতুন প্রজন্ম হল সেলফি প্রজন্ম। আর তা দোলের সঙ্গে মিশে গেছে নিজের মত করে।