যে কটি হাতেগোনা উৎসবের দিকে বাঙালি সারা বছর চেয়ে থাকে তার একটা অবশ্যই দোল। রঙের উৎসব ঘিরে সনাতনি রীতি আর চলমান আনন্দ একসঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে এগিয়ে চলে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তাই শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্র রঙিন মেজাজ। রঙ খেলায় মাতোয়ারা কচিকাঁচার দল। বেলা যত গড়িয়েছে রঙের খেলায় অংশ নিয়েছেন বড়রা।
দোল উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। সকাল থেকেই সেখানে ভক্তদের ঢল। এদিকে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সকালে কচিকাঁচাদের নিয়ে বার হয় প্রভাতফেরি। বাসন্তী শাড়ি আর বাসন্তী পাঞ্জাবীতে শিশুরা সেজেছিল ফুলের সাজে। মুখে ছিল রবীন্দ্রসংগীতের সুর। বেলা যতই গড়িয়েছে শহর থেকে গ্রাম ততই মেতে উঠেছে রঙের রংবাজিতে।
জল রঙ থেকে আবির, সব রঙেরই আজব গ্রাফিতিতে সেজেছে দেহ। অলি গলি রাজপথে তখন শুধুই রঙ আর রঙ। তিথি মেনে সাধারণত দোলের পরদিন সারা দেশে হোলি পালিত হয়। কিন্তু এবার দোল আর হোলি একই দিনে পড়েছে। ফলে ভিন রাজ্যেও এদিন হোলি পাতিল হচ্ছে। দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, সর্বত্রই রঙিন হয়ে উঠেছে মানুষের মন, শরীর।
এখন অনেক জায়গায় আলাদা একটি পার্কে বা আবাসনের লনে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সেখানে ডিজে এনে, রেইন ডান্সের ব্যবস্থা করে, ঠান্ডাই থেকে অন্যান্য হোলির খাবারের বন্দোবস্ত রেখে একেবারে ইভেন্টের রূপ দেওয়া হয় হোলিকে। তেমন হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
এদিন দোল উপলক্ষে শহরের অনেক আবাসনে বসন্ত উৎসব পালিত হয়। সকাল থেকেই বেজেছে ডিজে। গানের তালে আর ঠান্ডাইয়ের আমেজে রঙের উৎসব চুটিয়ে উপভোগ করেছেন আবাসনের আবালবৃদ্ধবনিতা। দুপুরে ছিল খাওয়া দাওয়ার বন্দোবস্ত। এছাড়া বিভিন্ন এলাকাতেও বসন্ত উৎসব পালিত হয়েছে। স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগেই মূলত পালিত হয়েছে দোল। সকাল থেকে রঙ খেলার পাশাপাশি ছিল নাচ, গানের বন্দোবস্ত। সঙ্গে খাওয়া দাওয়া। সব মিলিয়ে রাঙা ফুলের হাসি ও সবুজ কিশলয়কে সাক্ষী রেখে এবছর চিরাচরিত রীতি মেনেই দোল উৎসব পালন করলেন বঙ্গবাসী। হোলিতে মাতলেন দেশবাসীও।