শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। দোলের আগের দিন থেকে শান্তিনিকেতনমুখী ট্রেনগুলিতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। হোটেলে হোটেলে থিক থিক করে মানুষ। শান্তিনিকেতনে হাজির হয়ে হোটেল পাওয়া দুষ্কর হয়। অনেক দিন আগে থেকে বুক করা থাকে হোটেল বা থাকার জায়গা।
শান্তিনিকেতনে বসে বসন্ত উৎসব দেখার লোভ অনেকেই ছাড়তে পারেন না। এ এক স্মৃতিতে রাখার মত অভিজ্ঞতাও। যাঁরা যেতে পারেননা তাঁরা দূরদর্শনে দোলের সকালে শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব সরাসরি উপভোগ করেন। কিন্তু এবার সেই চিরাচরিত বসন্ত উৎসবে ছেদ পড়ল।
আগেই ঠিক ছিল যে এবার বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণে বসন্ত উৎসব হবেনা। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে তা হবে পৌষমেলা প্রাঙ্গণে। সেখানে প্রস্তুতিও প্রায় সারা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহুর্তে এল নির্দেশ। করোনা ভাইরাসের জন্য সেই উৎসবও বাতিল করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ফলে এবার শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের দেখা নেই।
স্থানীয় মানুষ থেকে হোটেল ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ দোকানদার। সকলেই হতবাক দোলের সকালের দৃশ্য দেখে। বোলপুর শহরটাকে দোলের সকালে যে ভাবে দেখে তাঁরা অভ্যস্ত তা এবার নেই। বেশ অদ্ভুতই লেগেছে তাঁদের এমন বেমানান দোল। ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। তবে কিছু পর্যটক এদিন হাজির হয়েছিলেন বোলপুরে। শান্তিনিকেতনে এদিন পর্যটকদের প্রবেশেই ছিল নিষেধাজ্ঞা। দোল খেলা তো দূরের কথা। ফলে তাঁরা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হাজির হন সোনাঝুরিতে।
দোলের সকালে সোনাঝুরি, খোয়াইতেই দোল খেলে দিন কাটান আগত পর্যটকেরা। কিছু হোটেলে এদিন বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। চেষ্টা করা হয়েছিল পর্যটকদের কিছুটা হলেও মন ভরাতে। কিন্তু যে দৃশ্য একবার চোখে লেগে গেছে, যে অনুভূতি ছুঁয়ে গেছে প্রাণ, যে সকালে আকাশ ভরেছে নানা রঙে, সে দিনটা সেভাবেই না পেলে কারও মন ভরে কি? ভরে না। পর্যটকদের আনন্দও তাই এদিন ষোলোকলা পূর্ণতা পেল না।