এখানে আবির নয়, রং খেলা হয় চিতাভস্ম দিয়ে
আবির যেমন রং খেলার এক অঙ্গ, তেমনই এক জায়গায় চিতাভস্মই আবির। তা দিয়েই হয় রং খেলা। এই রং খেলায় শামিলও হন বহু মানুষ।
রংয়ের উৎসব দোল মানেই তো নানা রংয়ের রংবাজি। আবির হোক বা জল রং, গোটা বাংলা তো বটেই গোটা দেশ মেতে ওঠে রংয়ের খেলায়। এই রং খেলা আবার দেশের নানা প্রান্তে নানা অদ্ভুত সব উপায়ে খেলা হয়ে থাকে। সেখানকার সেটাই রীতি।
যেমন চিতাভস্ম দিয়ে রং খেলা। মানুষের জীবনাবসান হলে তাঁর নশ্বর দেহটি দাহ করাই হিন্দু রীতি। এজন্য শহর গ্রাম জুড়ে ছড়িয়ে আছে শ্মশান।
অনেক শ্মশানেই এখনও পুরাতনি রীতি মেনে কাঠের চুল্লিতে দাহকার্য করা হয়। ভারতীয়দের প্রাচীন বিশ্বাস কারও দেহ বারাণসীর মণিকর্ণিকা ঘাটের শ্মশানে দাহ করা হলে তাঁর মোক্ষলাভ হয়।
কথিত আছে মহা শিবরাত্রিতে শিব পার্বতীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর ‘রঙ্গভরি একাদশী’র দিন ভগবান শিব প্রথমবারের জন্য পার্বতীকে কাশীতে নিয়ে আসেন।
সেই খুশিতে গোটা কাশীবাসী রং খেলায় মেতে ওঠেন। কিন্তু সেই নানা রং নিয়ে খেলায় মেতে উঠতে পারেননি মণিকর্ণিকা ঘাটের শ্মশানে থাকা আত্মারা। কথিত আছে ভগবান শিব সেদিন নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে হোলি খেলেন। আর তা খেলা হয় চিতার ভস্ম দিয়ে।
মণিকর্ণিকা ঘাটের এই চিতাভস্ম দিয়ে রং খেলা দীর্ঘদিন ধরেই সীমিত ছিল সাধু সন্তদের মধ্যে। সাধারণ মানুষ এই রং খেলায় অংশ নিতে পারতেন না।
কিন্তু এখন বারাণসীর মণিকর্ণিকা ঘাটে এই চিতাভস্ম দিয়ে হোলি খেলায় অংশ নেন সমাজের নানা স্তরের মানুষ। এই হোলি ‘মশান হোলি’ বা ‘চিতা কি ভস্ম হোলি’ নামে খ্যাত। যা দেখতেও বহু মানুষ হাজির হন বারাণসীতে।