ঘাড়ে ব্যথা নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি
অফিস-কাছারিতে বহুক্ষণ বসে থাকতে হয়। ফলে ঘাড়ে ব্যথা অবশ্যম্ভাবী। কর্পোরেট লাইফে এই সমস্যা মহামারির মত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে অনেকেই ছুটছেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে।
আজকাল হাড়ভাঙা খাটুনির যুগ। অফিস-কাছারিতে বহুক্ষণ বসে থাকতে হয়। ফলে ঘাড়ে ব্যথা অবশ্যম্ভাবী। ঘাড়ে ব্যথার নানান রকম কারণ রয়েছে। কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করলে কিংবা অনেকটা সময় যানবাহনে বসে থাকলে ঘাড়ে ব্যথা হয়ে যেতে পারে। আজকালকার কর্পোরেট লাইফে এই সমস্যা মহামারির মত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে অনেকেই ছুটছেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। চিকিৎসকেরা অবস্থা বুঝে অনেক সময়ে বিশ্রাম, ব্যায়াম ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিচ্ছেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতেও এই ঘাড় ব্যথার সমস্যার সমাধান রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছিলাম হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বিকাশ মণ্ডলের সঙ্গে।
বিকাশবাবু জানালেন, ঘাড়ে ব্যথার কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হল, আঘাত, সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস, সার্ভাইটিস স্পন্ডিলাইটিস, অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, অস্টিও আথ্রাইটিস, স্পাইনাল কর্ড টিউমার বা স্পাইনাস কর্ড ডিজেনারেশন। ঘাড়ে ব্যথা বা যন্ত্ৰণা হল একটি লক্ষ্মণ। কেন ঘাড়ে ব্যথা হয় সে সম্পর্কে গবেষণা রয়েছে। ঘাড়ে যন্ত্রণা হলে তা অনেক সময়ে হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। অস্ট্রিও আর্থারাইটিসে যদি সার্ভাইক্যাল স্পাইন আক্রান্ত হয় তাহলে সেই যন্ত্রণা মাথার পিছনে ছড়িয়ে যায়। এই যন্ত্ৰণা ক্রমশ ঘাড় বা কাঁধে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ঘাড় থেকে হাত পর্যন্ত ব্রেকিয়াল নার্ভের ব্যথা দেখা দিতে পারে।
ঘাড়ে ব্যথা সাধারণত ৫০ বছরের পরে দেখা যায়। তবে তার চেয়ে কম বয়সেও যে ঘাড়ে ব্যথা হচ্ছে না তেমন নয়। অস্টিও আথ্রাইটিস হাঁটুর সন্ধিস্থলের তরুণাস্থি ওজন বহনকারী তলের ক্ষয়জনিত একটি অবস্থা। শিরদাঁড়ায় যে সন্ধিবাত প্রবাহিত হয় তাঁকে বলে অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস। স্পাইনাল সংযোগস্থলে প্রদাহ বাড়তে পারে। এতে আবার সাধারণত কুড়ি থেকে চল্লিশ বছর বয়সের ব্যক্তিরাই বেশি আক্রান্ত হন। গাউট বা গেঁটে বাতে সাধারণত পায়ের বুড়ো আঙুলের মেটাটারসো ফ্যালেনজিয়াল সন্ধিস্থল আক্রান্ত হয়। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি দেখা যায়। প্রথমে গোড়ালি, হাতে ব্যথা শুরু হয়। পরে হাঁটু, কনুই, কোমর, কাঁধ-সহ বহু সন্ধিস্থলে ব্যথা হয়।
ঘাড়ের ব্যথা পরীক্ষা করার জন্যে প্রয়োজনে এক্স-রে বা এমআরআই করা হয়ে থাকে। ঘাড়ের ব্যথার হলে প্রাথমিক নিরাময় হল বিশ্রাম। বিকাশবাবুর মতে, অন্যথায় রোগ জটিল আকার নিতে পারে। কিংবা, রোগ সারতে দেরি হতে পারে। ইনফ্রারেড তাপ স্থানীয় পেশির সঙ্কোচন শিখিল করতে যথেষ্ট সাহায্য করে। সাধারণভাবে গরম জলে স্নান প্রভৃতি উপায়ে তাপ প্রয়োগ করা পারে। ফিজিওথেরাপি বা মাসাজ উপকারি।
হোমিওপ্যাথিক হল সদৃশ বিধান মতে লক্ষণভিত্তিক নিরাময় পদ্ধতি। সঠিক ওষুধ নির্বাচন হলে ঘাড়ের ব্যথায় হোমিওপ্যাথিক নিরাময় পদ্ধতিতে সুফল পাওয়া যায় বলেই দাবি করলেন চিকিৎসক বিকাশ মণ্ডল। এরমধ্যে অনেক ওষুধ এমনও রয়েছে যা আমজনতার অনেকের জানা। যেমন, আর্নিকা, রাসটাস্ক। এছাড়াও নানা ওষুধ রয়েছে। তবে প্রথমে বোঝা দরকার রোগীর সমস্যাটা ঠিক কোথায় এবং এর ধরণ কেমন। যা থেকে এটা পরিস্কার হবে যে কি থেকে তাঁর এই সমস্যা হচ্ছে। সেই বুঝে ওষুধ।