ইটার ঝাপটায় হন্ডুরাসে হাহাকার
ইটার ঝাপটা যে এমন ভয়ংকর হবে তা বোধহয় আন্দাজ করা যায়নি। কিন্তু তার ধাক্কায় জটায়ুর উপন্যাস নয়, সত্যিই হন্ডুরাসে হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তেগুসিগালপা : ইটা-র ঝাপটা যে নেহাত আলতো হবে না তা বোঝা গিয়েছিল। কিন্তু তা যে এমন ভয়ংকর হবে তা বোধহয় কেউ ভাবতেও পারেননি। মধ্য আমেরিকার ওপরই আসলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ইটা’। নিকারাগুয়ায় তছনছ চালায় সে। তারপর তা হাজির হয় হন্ডুরাসে।
কিন্তু হন্ডুরাসে পৌঁছতে পৌঁছতে তা কিছুটা শক্তি হারায়। হন্ডুরাসে একটি ক্রান্তীয় নিম্নচাপের চেহারা নিয়ে প্রবেশ করা ইটা ভয়ংকর তাণ্ডব চালায়।
হন্ডুরাসে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ইটা-র ঝাপটায়। ৪ জন এখনও নিখোঁজ। ঝড় তো ছিলই, সেইসঙ্গে অতি প্রবল বৃষ্টি একটানা চলেছে হন্ডুরাসে। ইটার প্রভাবে হওয়া সেই অতি বৃষ্টি বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
অনেক জায়গায় হড়পা বান তৈরি হয়। ভাসিয়ে নিয়ে যায় সবকিছু। সেই জলের তোড়েই ভেসে যাওয়া ৪ জনের এখনও কোনও খোঁজ নেই। মানুষের পাশাপাশি অনেক গবাদি পশুও ভেসে গেছে জলের তোড়ে। ভেসে গেছে অগুন্তি গাছপালা, বাড়িঘর।
ইটা-র ঝাপটায় হন্ডুরাসে ১৭ লক্ষ মানুষ আতান্তরে পড়েছেন। বহু মানুষ ঘর হারিয়েছেন। সব ভেসে গেছে তাঁদের। অনেকে পরিজন হারিয়েছেন। অনেক মানুষ নানাভাবে আহত হয়েছেন।
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ শুরু হয় সেখানে। ২১টি ব্রিজ ভেসে গেছে। ১০০-র ওপর রাস্তা হারিয়ে গেছে জলের তলায়। ১৭৫টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। সেখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের আশ্রয় হয়েছে।
এত দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় জল ঢুকতে থাকে এবং সেখানে জলস্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে যে মানুষ বাড়ির দোতলায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। চারধারে জল। মাঝে কিছু বাড়ির মাথায় মানুষের ভিড়। এমনই পরিস্থিতিতে তাঁরা অপেক্ষায় থাকেন কখন তাঁদের উদ্ধার করা হবে, কখন তাঁরা খাবার এবং পানীয় জল পাবেন।
বিভিন্ন এলাকায় দুর্গত মানুষের কাছে খাবার ও জল পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাও চলছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ধাক্কা খাওয়ায় বহু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উদ্ধারকারীদের পক্ষেও সব জায়গায় পৌঁছনো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা