চেহারায় ডলফিন, কিন্তু কুমির, দানবীয় সরীসৃপ দেখে অবাক সকলে
পৃথিবীর ভৌগোলিক পরিবর্তন প্রভাব ফেলে দৈত্যাকার কুমিরদের ওপর। কিন্তু এতটা পরিবর্তন হয়তো আশা করতে পারেননি খোদ বিজ্ঞানীরা।
কুমির, তোমার জলকে ছুঁয়েছি। শৈশবে কুমিরডাঙা খেলতে গিয়ে কতবারই জল ছুঁয়ে ফেলার মাশুল দিতে হয়েছে! অসতর্কতাবশত ডাঙা ছুঁয়েছ কি কুমির সাজা বন্ধুর পেটে গেছ। শুধু ছোটবেলা কেন, আজও জলজগতের এই মাংসাশী সরীসৃপের ভয়ে থরহরি কম্প মানুষ।
তবে কুমিরে কাঁটা হয়ে থাকার দিনের হয়তো খুব একদিন অবসান হবে। হয়তো একটা দীর্ঘ সময়ের পর দেখা যাবে, দানবীয় সরীসৃপটি আর আগের মত রইল না। দারুণ ভেলকিবাজিতে কুমিরের কদাকার চেহারা গেল পাল্টে। হিংস্র প্রাণিটি হয়ে উঠল মানুষের পরম বন্ধু। একেবারে নিরীহ, মিষ্টি ডলফিনের মত! ভাবছেন পাগলের প্রলাপ আর কি!
কুমির কিনা ভোল পাল্টে হবে ডলফিন! এও কি সম্ভব! বিজ্ঞানীদের মতে সম্ভব! তখন পৃথিবীর ডাঙায় শাসন করছে ডাইনোসররা। ৩ ভাগ জলে দাপটে রাজত্ব চালাচ্ছে দানবাকার সব জলজীব। যাদের মধ্যে কুমির ছিল অন্যতম। তবে সেসব কুমিরের তুলনায় আজকের যুগে নদীতে ঘুরে বেড়ানো কুমির প্রজাতি আয়তন ও হিংস্রতায় শিশুসম।
একসময় পৃথিবীর ভৌগোলিক পরিবর্তন ঘটল। সেই পরিবর্তন প্রভাব ফেলল দৈত্যাকার কুমিরদের ওপর। কিন্তু এতটা পরিবর্তন হয়ত আশা করতে পারেননি খোদ বিজ্ঞানীরা।
১৯৯৬ সালের কথা। হাঙ্গেরির উত্তর পূর্বের গেরেসে পর্বত সংলগ্ন অঞ্চলে এক জীবাশ্ম সংগ্রাহক খুঁজে পান ৫ মিটার লম্বা এক প্রাণির জীবাশ্ম। পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা যায়, জীবাশ্মটি জুরাসিক যুগের এক কুমিরের।
তবে গবেষণায় অন্য এক জায়গায় ভিরমি খান জীববিদরা। কুমিরের জীবাশ্মে আধুনিক সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী ডলফিনের শরীরী গঠনের মিল অবাক করে দেয় তাঁদের। বিবর্তনের পথ ধরে প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিশেষ প্রজাতির কুমিরদের ডলফিনের চেহারা ধারণ করার তত্ত্বে নিশ্চিত হন বিজ্ঞানীরা।
আপাতত বুদাপেস্ট শহরের জাদুঘর ঠিকানা আদিমতম যুগের সেই কুমিরের জীবাশ্মের। যা দেখে ডলফিনের সঙ্গে কুমিরের সাদৃশ্য খোঁজার চেষ্টা করে চলেছেন দর্শকরা। — ছবি – সৌজন্যে – ট্যুইটার