আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বি গ্রুপে ডু অর ডাই ম্যাচে অতি সহজ জয় পেল ভারত। জয়ের জন্য নীল ব্রিগেডকে কোনও বড় লড়াই দিতে হলনা। টস জেতা থেকে শুরু করে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব বিভাগেই প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করেন বিরাটরা। ৮ উইকেটে জিতে শুধু প্রতিযোগিতায় টিকেই রইল না গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত, পৌঁছে গেল সেমিফাইনালেও। এদিন টস জিতে প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে পাঠান বিরাট কোহলি। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে ভাল চোখে নেননি। কারণ নক আউট ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে বড় রানের ইনিংস গড়ে চাপমুক্ত থাকা অনেক বেশি বুদ্ধিমানের কাজ হত বলেই মনে করছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিরাটের মাথায় হয়তো অন্য ভাবনা ঘুরছিল। এদিন ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই গুটিয়ে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ভুবনেশ্বর কুমার আর যশপ্রীত বুমরাহর মাপা বোলিংয়ের সামনে ক্রমশ রান রেট পড়তে থাকে। পাওয়ার প্লের সুবিধাও কাজে লাগাতে পারছিলেন না হাসিম আমলা-ডি ককের মত ওপেনাররা। তবে এই জুটি ক্রমশ দলকে ভাল রানের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। প্রথম ছন্দপতন দলগত ৭৬ রানের মাথায় আমলার আউট। তারপর ডি কক আউট হওয়ার পর ভরসা ছিলেন ডেভিলিয়ার্স। কিন্তু অবিবেচকের মত রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে ফেরত যান দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ের এই মহাতারকা। এরপরই মিলার ফের ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে রান আউট। এখানেই ভেঙে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ। এক এক করে পড়তে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট। একসময়ে যাদের স্কোর প্রায় ৩০০ হবে বলে মনে হচ্ছিল। পরে কমে ২৫০ হবে বলেই মনে করছিলেন ক্রিকেট বোদ্ধারা। তাঁরাই দেখলেন ২০০ রানের ঘরেও পৌঁছতে পারল না বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। খেলতে পারল না পুরো ৫০ ওভারও। ৪৪.৩ ওভারে ১৯১ রান করে সব উইকেট পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। টার্গেট ১৯২। ব্যাট করতে নামে ভারত। শুরুতেই রোহিত শর্মার উইকেট হারায় তারা। এরপর জুটি বাঁধেন বিরাট কোহলি-শিখর ধাওয়ান। ধাওয়ানকে এদিন অনেক বেশি ছন্দে মনে হয়েছে। বাউন্ডারির ধারাও বজায় রাখছিলেন খুব সুন্দরভাবে। অন্যদিকে বিরাটকে কিন্তু অতটা স্বচ্ছন্দ শুরুতে মনে হয়নি। ২টো ক্যাচও দেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্বল ফিল্ডিং সেই ক্যাচ ফেলে দেয়। একটা ফেলেন মর্নি মর্কেল। অন্যটা হাসিম আমলা। বিরাটের মত ব্যাটসম্যান ২ বার জীবন পাওয়াই ম্যাচের লিখন পরিস্কার করে দেয়। ব্যক্তিগত ৭৮ রানের মাথায় ইমরান তাহিরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডু প্লেসির হাতে ধরা পড়েন ধাওয়ান। ততক্ষণে যদিও নিজের ছন্দ ফিরে পেয়েছেন বিরাট। ফলে যুবরাজের সঙ্গে জুটি বেঁধে রানের গতি বজায় রাখেন তিনি। ম্যাচ যে হাতছাড়া হয়ে গেছে তা ডে ভেলিয়ার্সরা বিলক্ষণ জানতেন। সেই জয়কে রাজকীয় করে দিলেন যুবরাজ। ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় দিলেন তিনি। কোহলি ৭৬ রান করে অপরাজিত রইলেন। যুবরাজের সংগ্রহ ২৩ রান। এদিনের জয়ের ফলে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল। সেমিফাইনালে আগামী বৃহস্পতিবার প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ।