বিশ্বকাপে ৬টি ম্যাচ এখনও পর্যন্ত খেলেছে ভারত। তার একটি ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গেছে। বাকি ৫টি ম্যাচেই জয় পেয়েছে বিরাটবাহিনী। এখনও পর্যন্ত ভারতই একমাত্র দল যারা একটাও ম্যাচ হারেনি। বৃহস্পতিবার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ম্যাচ। আর সেই ম্যাচ হেলায় জিতে নিল মেন ইন ব্লু। কার্যত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাথা তুলে দাঁড়ানোরই সুযোগ পায়নি। ১২৫ রানে হেরে যায় ক্যারিবিয়ানরা। এই হারের সঙ্গে সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এবারের বিশ্বকাপ সফর মোটামুটি সমাপ্ত।
বৃহস্পতিবার ম্যাঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ব্যাট করতে নামার পর রোহিত শর্মা ও কেএল রাহুল জুটি বুঝতে পারে এই পিচে রান তোলা কঠিন। বোলারদের সুবিধা দিচ্ছে পিচ। ফলে খুব বেশি মারকাটারি না খেলে ধরে খেলে উইকেট বাঁচিয়ে রান তোলার রাস্তায় হাঁটে ভারত। রোহিত ১৮ রান করে ফেরার পর বিরাট কোহলি ও কেএল রাহুল রান তুলতে থাকেন। বিরাট চেনা ছন্দে থাকলেও রাহুল ধরে খেলার রাস্তায় হাঁটেন। তবে রান উঠতে থাকে। ঝোড়ো গতিতে না হলেও রানের গতি ধরে রাখেন বিরাট কোহলি। রাহুল ৪৮ রান করে ফেরার পর বিরাটের সঙ্গে বিজয় শঙ্কর জুটি বাঁধলেও কঠিন পিচে এঁটে উঠতে পারছিলেন না তিনি। ১৪ রান করে ফেরেন বিজয়। একই অবস্থা হয় কেদার যাদবেরও। তিনিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণের সামনে মাত্র ৭ রান করে আউট হন।
এবার ম্যাচের হাল ধরে বিরাট কোহলি ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে ধীরে ব্যাটিং করার জন্য সমালোচনার শিকার ধোনি কিন্তু এদিনও কোনও ঝুঁকির রাস্তায় হাঁটেননি। বরং নিজের ছন্দে উইকেট ধরে রেখে পিচ বুঝে ধরে খেলতে শুরু করেন। ভালই উঠছিল রান। কিন্তু বিরাট ব্যক্তিগত ৭২ রানের মাথায় একটি বেপরোয়া শট মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। বিরাট ফেরার পর ধোনি ও হার্দিক পাণ্ডিয়া জুটি বাঁধেন। এই জুটি রান টানতে থাকে। তবে হার্দিক এই পিচে ঠিক নিজের মারমুখী ছন্দে খেলতে পারেননি। তবু যা খেলেন তা দলের খাতায় একটা বড় অবদান রেখে যায়। কম বলে বেশি রান একমাত্র তাঁর ব্যাট থেকেই আসে। হার্দিক করেন ৪৬ রান। এরপর ০ রানে ফেরেন সামি। শেষ ওভারে কুলদীপকে সঙ্গে করে ধোনি তাঁর সেই পুরনো ফর্ম তুলে ধরেন। ২টি ছক্কা ও ১টি চার হাঁকিয়ে দলের রানকে ২৬৮-তে তুলে নিয়ে যান ধোনি। নিজে করেন ৫৬ রান। রয়ে যান অপরাজিত।
২৬৯ করলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে এদিন শুরু থেকই উইকেট হারাতে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। খুব বিশাল অঙ্কের রান তাড়া করতে না হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানেরা এদিন ভারতীয় বোলিং আক্রমণের সামনে সেভাবে দাঁড়াতেই পারেননি। ভারতীয় বোলিং আক্রমণে এদিন সবচেয়ে বিধ্বংসী রূপ নেন মহম্মদ সামি। ৪ উইকেট তোলেন তিনি। শুরুতেই শাই হোপ (৫) ও ক্রিস গেইলকে (৬) ফিরিয়ে চমকে দেন সামি। অ্যামব্রিস ও পুরান কিছুটা রান টেনে নিয়ে গেলেও হার্দিক ফেরান অ্যামব্রিসকে (৩১)। তারপরই ফেরেন সেট ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান (২৮)। তারপর মোটামুটি বাকি ব্যাটসম্যানেরা এসেছেন আর গেছেন।
অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ৬ রান করে ফেরেন। পিঞ্চ হিটার কার্লোস ব্রেথওয়েট ফেরেন মাত্র ১ রান করে। ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ফেরেন ০ রানে। শিমরন হেটমায়ার ফেরেন ১৮ রান করে। কোটরেল করেন ১০ রান। থমাস ৬ রানে আউট হন। কেমার রোচ ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৪ ওভার ২ বল খেলে ১৪৩ রান করে। হারায় সব উইকেট। ভারতের কাছে ম্যাচ হারে ১২৫ রানে। ম্যাচের সেরা হন বিরাট কোহলি। এদিনের জয়ের হাত ধরে ভারত পয়েন্ট টেবিলের ২ নম্বরে উঠে এল।