বিশ্বকাপে লিগ পর্যায়ের শেষ ম্যাচে শনিবার শ্রীলঙ্কাকে কার্যত হেলায় হারাল ভারত। রোহিত শর্মা ও কেএল রাহুল সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ২৬৫ রানের টার্গেট ৩৯ বল বাকি থাকতেই তুলে নেয় বিরাটবাহিনী। তাও মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে। এদিনের সেঞ্চুরির হাত ধরে রোহিত চলতি বিশ্বকাপে ৫টি সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। রান করেছেন ৬৪৭। যা আজ পর্যন্ত একটি বিশ্বকাপে কেউ করতে পারেননি। একটি বিশ্বকাপে ৫টি সেঞ্চুরিও কারও নেই। এখনও ম্যাচ বাকি, ফলে রোহিতের সামনে রেকর্ডকে আরও দুরন্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ যথেষ্ট রয়েছে। এদিন ম্যাচের সেরাও হন তিনি। অন্যদিকে গুরুত্বহীন ম্যাচেও জ্বলে উঠতে পারল না শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার লাসিথ মালিঙ্গা এদিন ১০ ওভার বল করে ১টি মেডেন ওভার নিয়ে ৮২ রান দিয়ে ১ উইকেট পান। অর্থাৎ ৯ ওভারে দেন ৮২ রান। তুলে নেন রাহুলের উইকেট। বিশ্বকাপে জীবনের শেষ বলে চারও খান। এদিনই ছিল মালিঙ্গার জীবনের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ।
লিডসের মাঠে শনিবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুণারত্নে। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে শ্রীলঙ্কা। প্রথমেই অধিনায়ক ফেরেন ১০ রান করে। এরপর কুশল পেরেরা ১৮ রান করে আউট হন। দুজনকেই ফেরান বুমরাহ। কুশল মেন্ডিস ৩ রান করে আউট হন। অভিষ্কা ফার্নান্ডো আউট হন ২০ রান করে। দলের ৫৫ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট পড়ে যায়। চাপে পড়া শ্রীলঙ্কার এবার হাল ধরেন মিডল অর্ডারের লাহিরু থিরিমানে ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। এঁদের দুজনের যুগলবন্দিতে শ্রীলঙ্কা ক্রমশ সম্মানজনক স্কোর খাড়া করতে থাকে।
থিরিমানে যখন ৫৩ রান করে ফেরেন তখন শ্রীলঙ্কার স্কোর পৌঁছে গেছে ১৭৯ রানে। এখানে ফের জুটি তৈরি করেন ম্যাথিউজ ও ডি সিলভা। ম্যাথিউজ এদিন করেন ১১৩ রান। থিসারা পেরেরা ফেরেন ২ রান করে। দলের জন্য আরও ২৯ রান যোগ করে অপরাজিত থাকেন ডি সিলভা। শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে তোলে ২৬৪ রান। যা বর্তমান একদিনের ক্রিকেটে তেমন একটা বিশাল রানও নয়, আবার একদম অগ্রাহ্য করার মত রানও নয়।
২৬৫ রান করলে জিতবে এই অবস্থায় খেলতে নেমে এদিন শুরু থেকেই রোহিত শর্মা ও কেএল রাহুলকে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। দুজনেই প্রথমে অল্প সময় নেন নিজেদের সেট করতে। তারপর দুজনেই প্রহার শুরু করেন। উইকেট দূরে থাক ভারতের ২ ওপেনারের জোড়াল শট সামলাতেই গোটা শ্রীলঙ্কা দলটা হিমসিম খেতে থাকে। হিমসিম খান বোলাররাও। কারণ কোন বলে যে এই দুজন পরাস্ত হবেন তাই বুঝে উঠতে পারছিলেননা তাঁরা। ভারতের প্রথম উইকেট পড়ে দলের ১৮৯ রানের মাথায়। তখনই জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। রোহিত শর্মা আউট হন ১০৩ রান করে। ২টি ছক্কা ও ১৪টি চার হাঁকান তিনি।
রাহুলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক কোহলি। ১১১ রান করে মালিঙ্গার বল পড়তে না পেরে ক্যাচ তুলে আউট হন কেএল রাহুল। এই বিশ্বকাপেই তাঁর প্রথম শতরান এল এদিন। এটাই তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ। ওপেন করার সুযোগ পেয়েছেন শিখর ধাওয়ান চোট পাওয়ায়। তবে শিখরের অভাব পূরণ করে দিয়েছেন তিনি। পরে ঋষভ পন্থ নেমে একটি চার হাঁকিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার পর খেলা শেষ করেন বিরাট কোহলি (৩৪) ও হার্দিক পাণ্ডিয়া (৭)। ৩৯ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জেতে ভারত। শ্রীলঙ্কার এদিনই শেষ হল বিশ্বকাপ অভিযান। লিগ টেবিলে শ্রীলঙ্কা শেষ করল ৬ নম্বরে।