অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ঘরে তুলল ভারত। গড়ল ইতিহাস। গর্বিত করল ভারতবাসীকে। আর বিশ্বকে দেখিয়ে দিল অনূর্ধ্ব ১৯ হলে কী হবে তাদের খেলার মান ও পেশাদারিত্ব কোনও অংশে বড়দের চেয়ে কম নয়। এদিন গোটা ভারতীয় দল যে টিম গেমের পরিচয় দিল। যেভাবে সকলে তাদের সেরাটুকু উজাড় করল, তারই সুফল ঘরে তুলল ভারত। এদিন অস্ট্রেলিয়াকে নিউজিল্যান্ডের পিচে কার্যত ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, সব বিভাগেই পর্যুদস্ত করেছে ভারত। তবে এর মাঝেও যেন ধ্রুবতারার মত ঝলমল করল মনোজ কার্লার বিধ্বংসী ইনিংস। তাঁর সেঞ্চুরি হাঁকানো চওড়া ব্যাট এদিন অস্ট্রেলিয়ার চ্যালেঞ্জকে অনেক সহজ করে দেয়।
নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মৌনগানুইয়ের বে ওভালের সবুজ পিচে এদিন টস জেতে অস্ট্রেলিয়া। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কিন্তু এদিন শুরু থেকেই ভারতীয় বোলিং দাপটে অজি অনূর্ধ্ব ১৯ দলের ব্যাটিং লাইনআপ তেমন এঁটে উঠতে পারছিল না। ৩২ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর থেকে জোনাথন মার্লো বাদ দিলে কেউই দাগ কাটার মত ইনিংস খেলতে পারেননি। বরং নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তেই থাকে। অস্ট্রেলিয়ার জোনাথন মার্লোর ৭৬ রান বাদ দিলে ফাইনালের মত ম্যাচে দলের জন্য বড় ইনিংস কেউই উপহার দিতে পারলেন না। অজি মিডল অর্ডার থেকে টেল এন্ডাররা তো কার্যত ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। পুরো ৫০ ওভার শেষ করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। তার আগেই সব উইকেট হারায় তারা। ৪৭.২ ওভারে ২১৬ রান করেই গুটিয়ে যায় অজি ইনিংস।
রান তেমন বড় নয়। লক্ষ্য ধরাছোঁয়ার মধ্যে। শুধু দায়িত্বপূর্ণ ব্যাটিং করতে হবে। উইকেট ছুঁড়ে এলে হবে না। এই শর্তে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ দল এদিন যে পেশাদারিত্ব দেখাল তা অনেকদিন মনে থাকবে সকলের। ভারতীয় ক্রিকেটের মান ও মানসিকতা যে কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তার নমুনা এদিন ভারতীয় তরুণদের ব্যাট দিয়ে গেল। অধিনায়ক পৃথ্বী শাহ ২৯ রানে আউট হলেও এদিন মনোজ কার্লার ব্যাট দিয়ে আগুন ঝরেছে। তাঁর মারকাটারি ব্যাটিংয়ের হাত ধরেই এদিন অনেক সহজে ইতিহাস গড়ল ভারত। জিতে নিল অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ। পৃথ্বী শ ও শুভমান গিল (৩১)-এর উইকেট হারিয়েই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ভারত। মনোজ কার্লা ১০২ বলে ১০১ ও ভারতীয় কিপার হার্বিক দেশাই ৬১ বলে ৪৭ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। ভারত জেতে ৮ উইকেটে। ৩৮.৫ ওভারেই ২১৬ রান টপকে যায় ভারত। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ করেই বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে উল্লাসে ফেটে পড়ে ভারতীয় দল। ট্যুইটারে ভারতীয় দলের জন্য আছড়ে পড়তে থাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের ঝড়।