World

৩৭০ প্রত্যাহার মোদীর ঐতিহাসিক ভুল, তাঁদের কূটনৈতিক জয়, দাবি ইমরান খানের

ভারত জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর থেকেই পাকিস্তান সোচ্চার হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে দরবার করেও ফল হয়নি। সকলেই এটা ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলে পাকিস্তানের সামনে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। সুরাহা হয়নি রাষ্ট্রপুঞ্জে আবেদন জানিয়েও। তারপরও সোমবার পাকিস্তানবাসীর জন্য জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ইমরান খান সুর চড়ালেন। যা বারবার বুঝিয়ে দিয়েছে দেশবাসীর সামনে নিজের ভাবমূর্তিকে ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন ইমরান খান। ক্রিকেটার তথা রাজনীতিবিদ ইমরান খান পাক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এদিন দাবি করেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাকি ঐতিহাসিক ভুল করেছেন। এতে কাশ্মীরের স্বাধীনতার পথই প্রশস্ত হল।

সারা বিশ্বের দরজা যেখানে তাঁর সামনে বন্ধ হয়ে গেছে সেখানেও ইমরান এদিন দাবি করেন এটা পাকিস্তানের কূটনৈতিক জয়। কারণ কাশ্মীরকে আন্তর্জাতিক ইস্যু করতে পাকিস্তান এর ফলে সক্ষম হল। ১৯৬৫-র পর রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীর নিয়ে বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেছে। বিদেশি রাষ্ট্রনেতা ও বিদেশি দূতাবাসগুলির সঙ্গেও এ নিয়ে কথা হয়েছে পাকিস্তানের। তাছাড়া বিদেশি সংবাদমাধ্যমকেও এই বিষয়ে জানিয়ে কাশ্মীর নিয়ে সারা বিশ্বে খবর করা সম্ভব হয়েছে।


ইমরান বলেন, তাঁর দেশ সব রাষ্ট্রের সঙ্গেই শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায়। ভারত বা আফগানিস্তানের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। কিন্তু ভারত সুযোগ পেলেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে সুর চড়ায়। তিনি দাবি করেন, ভারতকে তিনি বলেছেন কোনও বিষয়ে আলোচনায় ভারত এক পা এগোলে পাকিস্তান ২ পা এগোবে। পাকিস্তানের কাছে কাশ্মীর সবচেয়ে বড় ইস্যু। কিন্তু তা নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই ভারত বিষয়টা এড়িয়ে গিয়ে পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপাতে থাকে।

হুঁশিয়ারির সুরও শোনা গেছে ইমরানের গলায়। তিনি বলেন, যদি ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধের পথে হাঁটে, যদি পারমাণবিক যুদ্ধ হয়, তবে কেউ জিতবে না। কিন্তু তার প্রভাব সারা বিশ্বের ওপর পড়বে। এখন এ নিয়ে তারা কী করবে তা আন্তর্জাতিক মঞ্চের হাতে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি কাশ্মীর ইস্যু রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় তুলবেন। তাছাড়া নিউ ইয়র্কে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রনেতার সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলবেন। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বারবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে ব্যর্থ হওয়ার পর যে এবার ইমরান খান পাল্টা রাষ্ট্রসংঘের ওপর চাপ তৈরির কৌশল নিয়েছেন তাও এদিন পরিস্কার করে দেন তিনি। ইমরান জানান, কাশ্মীরীদের সুরক্ষা দেওয়ার আশ্বাস রাষ্ট্রসংঘই দিয়েছিল। তাই এখন তাদেরই কিছু করতে হবে।


পাক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি কাশ্মীরের দূত হিসাবে কাজ করবেন। প্রতি সপ্তাহে পাকিস্তানে একটি করে ৩০ মিনিটের ইভেন্ট হবে। যা কাশ্মীরীদের বার্তা দেবে যে পাকিস্তান তাদের পাশে আছে। এদিকে অন্যান্য রাষ্ট্র তো বটেই এমনকি গালফ দেশগুলি ও ইসলামিক কনফারেন্সের গোষ্ঠীভুক্ত মুসলিম রাষ্ট্রগুলিও জানিয়ে দিয়েছে তারা এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। এটা পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা। ইমরান এদিন সে প্রসঙ্গ তুলে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন, অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য অনেক রাষ্ট্র তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। তবু তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ইমরান। প্রায় একলা চলো নীতিতেই যে আগামী দিনে পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে পড়ে থাকবে তা এদিন দেশবাসীকে জানিয়েছেন ইমরান খান। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button