তৃতীয় দিনের শেষেই বোঝা গিয়েছিল ভারতের পাল্লা ভারী। কিন্তু চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করা এলগার আর আমলার জুটি যেভাবে ‘স্লো বাট স্টেডি’ নীতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার রানকে জিতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তাতে ফের ধুপ করে নিভতে বসেছিল বুকভরা আশা। মনে হচ্ছিল আর শেষ রক্ষা হলনা। ভারতের হোয়াইট ওয়াশ সময়ের অপেক্ষা। দলগত ১২৪ রানের মাথায় আমলার উইকেট পড়ে। তখনও ক্রিজে বিধ্বংসী মেজাজে এলগার। যেন খেলা জিতিয়েই ঘরে ফিরবেন পণ করে নেমেছেন। পড়ে আছে প্রোটিয়াদের দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপ। কিন্তু ঠিক এখান থেকেই ভারতীয় বোলিং আক্রমণ যেন সুনামির মত আছড়ে পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকার বাকি খেলোয়াড়দের ওপর। ডেভিলিয়ার্স, ডু প্লেসি, ফিল্যান্ডাররা যেভাবে এসেছেন আর গেছেন তাতে হঠাৎই ফের প্রাণ ফিরে পান ভারতীয় সমর্থকেরা। উচ্ছ্বাস যেন আর থামেই না। একের পর এক উইকেট পড়েছে আর ভারত এগিয়ে গেছে জয়ের লক্ষ্যে। বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার বা ইশান্ত শর্মা ভাল বোলিং করলেও এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার কফিনে পেরেকটা গেঁথে দেন মহম্মদ সামি। তাঁর আগুনে বোলিং তুলে নিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ৫টি উইকেট। আর সেখানেই টার্নিং পয়েন্ট। খেলার পাল ঘুরে বইতে শুরু করে ভারতের পক্ষে।
এদিন আমলার ৫২ রান আর এলগারের অপরাজিত ৮৬ রান বাদ দিলে ফিল্যান্ডারই ১০ রান করে ২ অঙ্কের মুখ দেখেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ডি কক, পেলুকাও, রাবাডা ও মরকেল ৪ জন শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। যে দল ১২৪ রানে ২ উইকেট হারিয়েছিল। সেই দল ১৭৭ রানে সব উইকেট খোয়ায়। ভারত খেলা জিতে নেয় ৬৩ রানে। ফলে ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-১ ফলাফলে হারল ভারত। তবে সবকটা হারের লজ্জা থেকে রেহাই পেল। দক্ষিণ আফ্রিকায় এই টেস্ট সিরিজে একটা বিশেষত্ব কিন্তু মনে রাখার মত হয়ে রইল। সেটা হল খেলার দৈর্ঘ্য। প্রতি টেস্টেই চারটি করে ইনিংস খেলা হলেও কোনও টেস্টই পঞ্চম দিনের মুখ দেখল না। এ থেকেই পরিস্কার বর্তমান খেলোয়াড়দের ওপর টি-২০-র প্রভাব কতটা। এদিন সামির বোলিং ভারতকে জয়ের মুখে দেখালেও পুরো টেস্টে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে অনবদ্য পারফরমেন্সের জন্য ভুবনেশ্বর কুমারকে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়েছে। প্লেয়ার অফ দ্যা সিরিজ হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ভারনন ফিল্যান্ডার।