নিজের দেশ। নিজের পছন্দের পিচ। দর্শকের সিংহভাগও তাদের জন্যই গলা ফাটাচ্ছেন। নেইয়ের মধ্যে শুধু ডু প্লেসি ও ডেভিলিয়ার্সের চোটের কারণে অনুপস্থিতি। কিন্তু তাতে কী? আমলা, ডুমিনি, ডি ককদের মত বড় নাম দলে রয়েছে। রয়েছে আগ্রাসী বোলিং আক্রমণ। কিন্তু এতকিছু নিয়েও ২২ গজে প্রোটিয়াদের নিয়ে কার্যত খেলা করছে বিরাট বাহিনী। আত্মবিশ্বাসে ফুটছে গোটা দল। যার ফলাফল হল একদিনের সিরিজে ৩ ম্যাচের ৩টেই জিতে ৩-০-এ এগিয়ে যাওয়া। ৬ ম্যাচের সিরিজে আর ১টা ম্যাচ জিতলেই সিরিজ পকেটে ভারতের।
সিরিজের প্রথম ২টো একদিনের ম্যাচ হেরে অনেকটাই ব্যাকফুটে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই কার্যত বুধবার কেপটাউনের ম্যাচ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য মরণবাঁচন লড়াই। টিকে থাকার লড়াই। সেই ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক মার্করাম। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দলগত ০ রানে রোহিত শর্মার উইকেট হারায় ভারত। কিন্তু ওই একটি উইকেট পতনের চাপ কয়েক ওভারের মধ্যেই কাটিয়ে পাল্টা চাপ তৈরি শুরু করে বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ানের দায়িত্বশীল ব্যাট। রানের চাকা ঘুরতে থাকে। প্রবল গতিতে নয়। তবে ঠিকঠাক। রানও উঠছে। হাতে উইকেটও ধরা থাকছে। ক্রিজের ২ সেট ব্যাটসম্যান। ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর। অবশেষে ব্যক্তিগত ৭৬ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফেরেন শিখর। কিন্তু ক্রিজে তখনও দাপটের সঙ্গে দাঁড়িয়ে অধিনায়ক। এরপর রাহানে (১১), পাণ্ডিয়া (১৪) বা ধোনি (১০)-কে সঙ্গে করে রানের গতি বজায় রাখেন কোহলি। অন্যদিক থেকে উইকেট পতন হতে থাকলেও নিজে অটল পাহাড়ের মত দাঁড়িয়ে থাকেন বিরাট। ব্যাট চলতে থাকে। আসে শতরান। কিন্তু ব্যাট থেমে থাকেনি। কেদার যাদব (১) দ্রুত ফিরলেও স্লগ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারকে সঙ্গে করে শুরু হয় বিরাট প্রহার। আর বিরাটের সেই মারমুখী ব্যাটিংয়ের কাঁধে ভরসা করে ভারত পৌঁছে যায় ৩০৩ রানে। একসময়ে যা অসম্ভব মনে হচ্ছিল, শেষের দিকে বিরাটের ২টি ছক্কা ভারতকে সেই ৩০০ রান টপকানোর নিশ্চয়তা দেয়। বিরাট নিজে ১৬০ রান করে অপরাজিত থাকেন।
কেপটাউনের পিচে ৩০০ পার করা ভারতকে সামলানো প্রোটিয়াদের জন্য খুব সহজ যে হবে না তখনই তা মেনে নিচ্ছিলেন সব ক্রিকেট বোদ্ধাই। ভারতের রান তাড়া করতে নেমে সেটা অনেকটা পরিস্কারও হয়ে যায়। শুরুতেই আমলা (১)-কে ফিরিয়ে ঝটকা দেওয়ার পর মার্করাম (৩২), ডুমিনি (৫১), ক্লাসেন (৬) ফেরার পর কার্যত ম্যাচ জিততে গেলে টি-২০ খেলতে হত দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু সেই অবস্থায় তেমন ঝোড়ো ইনিংস খেলার মত ব্যাটিং লাইনআপ ছিলনা। তারওপর চাহাল আর কুলদীপের ভয়ংকর স্পিন আক্রমণ ঠেকাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন মিলার, জোন্ডো, ক্রিস মরিসরা। এদিন কোনও লড়াই তৈরি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪০ ওভার খেলে ১৭৯ রানেই সব উইকেট হারায় তারা। ১২৪ রানে বিরাট জয় পায় ভারত। খুব স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন বিরাট কোহলি।