ম্যাচটা অনায়াসে জিততে পারত উইন্ডিজ। কিন্তু সেই ম্যাচ চলে গেল রুদ্ধশ্বাস পর্যায়ে। ভারতীয় ব্যাটিংয়ে যেমন এদিন একাই ধ্রুবতারার মত ঝলমল করলেন বিরাট কোহলি। তেমনই ক্যারিবিয়ানদের আশা জাগিয়ে রাখলেন শাই হোপ। সঙ্গে মারকাটারি ব্যাটিং করে ম্যাচের মোড় ঘোরালেন শিমরন হেটমায়ার। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত এক ম্যাচ উপভোগ করলেন ক্রিকেটমোদী দর্শককুল।
বুধবার বিশাখাপত্তনমের রাজশেখর রেড্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এদিন ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপে তেমন কেউই বিশেষ নজর কাড়তে পারেননি বিরাট কোহলি ও আম্বাতি রাইডু ছাড়া। শুরুতেই আউট হয়ে ফেরেন রোহিত শর্মা। দলগত ৪০ রানের মাথায় ফেরেন শিখর ধাওয়ান (২৩)। কিছুটা হলেও চাপে পড়ে যায় ভারত। এই অবস্থায় ম্যাচের রাশ নিজের হাতে নেন বিরাট কোহলি। তাঁকে সঙ্গত দিতে অন্য প্রান্তে তখন আম্বাতি রাইডু। ক্রমশ রানের চাকা ঘুরতে থাকে। দলের ১৭৯ রানের মাথায় যখন রাইডু (৭৩) ফেরেন তখন কিন্তু ভারত ভাল অবস্থায়। ক্রিজে দাপটের সঙ্গে ব্যাট করছেন বিরাট কোহলি। এদিন বিরাট একাই দলকে টেনে নিয়ে যান। ৫০ ওভার শেষ হওয়া পর্যন্ত নট আউট থেকে করেন ১৫৭ রান। যার মধ্যে ৪টি ছক্কা ও ১৩টি চার রয়েছে।
এদিনটা বিরাটের জন্য অবশ্যই দারুণ একটা দিন। একাধারে তিনি যেমন দলকে টানলেন। করলেন শতরান। তেমনই আবার এদিনই একদিনের আন্তর্জাতিকে দ্রুততম ১০ হাজার রান করার কৃতিত্ব অর্জন করলেন তিনি। হলেন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচও। ভারত এদিন ৫০ ওভারের শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩২১ রান।
৩২২ রান করলে জিতবে। কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ক্যারিবিয়ানরা প্রথম থেকেই মারমুখী ক্রিকেট খেলার নীতি নেয়। এতে উইকেট যেমন পড়তে থাকে। তেমন রানও উঠতে থাকে। যদিও দলের ৭৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারানোর পর খেলার রাশ হাতে নেন উইকেটরক্ষক শাই হোপ ও শিমরন হেটমায়ার। এই ২ জনের দাপুটে ব্যাটিং ক্রমশ উইন্ডিজের জেতার আশা উজ্জ্বল করতে থাকে। একসময়ে অনেক ক্রিকেট বোদ্ধাও মনে করছিলেন এই ম্যাচ ভারতের হাত থেকে কার্যত বেরিয়ে গেছে। সেখানেই ব্যক্তিগত ৯৪ রানে আউট হয়ে ফেরেন শিমরন হেটমায়ার। ৯৪ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি ছক্কা ও ৪টি চার। হোপ তখন মাঠে উইন্ডিজের একমাত্র আশা। এরপর হোপ একাই কার্যত দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। অন্যদিকে এক এক করে পাওয়েল, হোল্ডার, নার্সরা এলেও তাঁরা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাতে কিন্তু হোপ আশা ছাড়েননি। শতরান করার পরও তিনি দলকে জয়ের লক্ষ্যে টেনে নিয়ে যাতে থাকেন। খেলা পৌঁছয় রুদ্ধশ্বাস পর্যায়ে। সেখানে এক বলে খেলায় ভারতের পাল্লা ভারী হয় তো, অন্য বলে উইন্ডিজের। শেষ বলে ক্যারিবিয়ানদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫ রান। এই বলে চার মারেন হোপ। খেলা শেষ হয় অমীমাংসিত হয়ে। যার প্রায় পুরো কৃতিত্বই হোপের। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন বিরাট কোহলি। প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ হন শাই হোপ। ৫ ম্যাচের সিরিজে সেই ১ ম্যাচে এগিয়েই থাকল ভারত।