পুনের মাঠে শনিবার টস জিতে প্রথমে উইন্ডিজকে ব্যাট করতে পাঠান বিরাট কোহলি। শুরু থেকেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়তে থাকে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং লাইনআপ। দলগত ১২১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে পড়ে যায় উইন্ডিজ। একে একে তখন প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন হেমরাজ (১৫), পাওয়েল (২১), স্যামুয়েলস (৯), হেটমায়ার (৩৭) এবং আর পাওয়েল (৪)। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে প্রায় সকলেই ধরে নিয়েছিলেন গত ম্যাচে যদিওবা উইন্ডিজ কিছুটা লড়াই দিতে পেরেছিল। তো এদিন গোহারান হারবে। এই অবস্থায় ম্যাচের হাল ধরে শাই হোপ ও অধিনায়ক হোল্ডার। হোল্ডারের কিছু মারকাটারি শট ও হোপের হাত ধরে আশার আলো দেখতে শুরু করে উইন্ডিজ। হোল্ডার ৩২ রান করে ফেরার পরও ম্যাচ একার কাঁধেই টানছিলেন হোপ। তবে ৯৫ রানের মাথায় আউট হয়ে তিনিও ফেরেন। কিন্তু ম্যাচের শেষে ভয়ংকর হয়ে ওঠে স্পিনার অ্যাশলে নার্সের ব্যাট। মাত্র ২২ বলে তাঁর ৪০ রানের অনবদ্য ইনিংস ক্যারিবিয়ানদের একটা চ্যালেঞ্জিং স্কোরের দিকে টেনে নিয়ে যায়। যা কার্যত প্রথম ৫ উইকেট হারানোর পর ভাবাই যাচ্ছিলনা। ৫০ ওভারের শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রান তোলে উইন্ডিজ।
চ্যালেঞ্জিং টোটাল হলেও জেতার জন্য রানের টার্গেট নেহাত শক্ত ছিলনা দেশের মাটিতে এমন দুরন্ত ব্যাটিং লাইনআপ থাকা বিরাট বাহিনীর। কিন্তু নেমে থেকেই মারমুখী মেজাজে ব্যাট করতে গিয়ে বিপদে পড়ে মেন ইন ব্লু। কিছুটা কি তবে আন্ডারএস্টিমেট করে ফেলেছিলেন বিরাটরা? সে প্রশ্ন উঠছে। শুরুতেই রোহিত শর্মার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ভারতের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলি। ফর্মে থাকা বিরাট শুরু থেকেই অনবদ্য ক্রিকেট খেলতে থাকেন। তাঁর ছবির মত শট মুগ্ধ করতে থাকে ক্রিকেট বোদ্ধাদেরও। অন্যদিকে শিখরও কম যাচ্ছিলেন না। কিন্তু একটা হঠকারী সুইপ করতে গিয়ে ফেরেন তিনি। মাঠে আসেন আম্বাতি রাইডু। কিন্তু তিনি কোনও রান যোগ না করেই প্যাভিলিয়নমুখো হন। বিরাটের সঙ্গে এরপর জুটি বাঁধেন ঋষভ পন্থ। ঝোড়ো ব্যাট করলেও ২৪ রান করে তিনিও ফেরেন। এবার কিন্তু চাপে পড়ে যায় ভারত। তবে আশা ছিল একটাই। বিরাট তখনও মাঠে। আর তাঁর উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনি। অনেকেই ভেবেছিলেন এই ২ জন যতক্ষণ মাঠে আছেন ততক্ষণ আশা আছে। এই অবস্থায় ধোনি মাত্র ৯ রান করে ফেরেন। ভারত তখন ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান। এবার বিরাটের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ভুবনেশ্বর কুমার। কিন্তু সেই জুটিও স্থায়ী হয়নি। ১০ রান করে ফেরেন ভুবি। এদিকে বিরাট করেন সেঞ্চুরি। ফলে অন্যদিকে যেই থাকুননা কেন বিরাটের ওপর ভরসা রাখছিল গোটা দেশ। কিন্তু এই চাপ হয়তো নিতে পারেননি ভারত অধিনায়ক। সেঞ্চুরি করলেও একটি হঠকারী শট হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। করেন ১০৭ রান। এরপর আর ভারতীয় ব্যাটিং ক্যারিবিয়ান বোলিং আক্রমণের সামনে টিকতে পারেনি। বিরাট একা একদিকে দাঁড়িয়ে লড়ে গেলেও অন্য প্রান্ত থেকে এদিন কোনও সাহায্যই পাননি তিনি। ২৪০ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতীয় ইনিংস। উইন্ডিজ জেতে ৪৩ রানে। ম্যাচের শেষ প্রান্তে এসে উইন্ডিজের হয়ে ৪০ রানের দুরন্ত ইনিংস এবং ১০ ওভার বল করে ৪৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিয়ে এদিন খুব স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের সেরা হন অ্যাশলে নার্স। ৫ ম্যাচের একদিনের সিরিজে ৩ ম্যাচের শেষে ১-১ করে এদিন সমতা ফেরাল উইন্ডিজ।