অস্ট্রেলিয়া সফরের শুরুটা ভাল হলনা ভারতের জন্য। ডাকওয়ার্থ লুইসের কোপে পড়ে দুরন্ত লড়াই দিয়েও শেষরক্ষা হলনা। টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪ রানে হারল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া ১৭ ওভারে ১৫৮ রান করার পর ঝেঁপে বৃষ্টি নামে ব্রিসবেনের গাব্বায়। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। এরপর যখন খেলা শুরু হয় তখন ডাকওয়ার্থ লুইসের কোপে পড়ে গেছে ভারত। ভারতকে জিততে গেলে ১৭৪ রান করতে হবে বলে অঙ্কের ফল দাঁড়ায়। কিন্তু এজন্য বাড়তি ওভার পাবেনা তারা। ওই ১৭ ওভারেই এই রান তুলতে হবে তাদের। টি-২০-তে ২০ ওভারেই ১৭৪ টার্গেট তাড়া করা কঠিন। সেখানে সেটাই করতে হবে ১৭ ওভারে! তারপরেও সুযোগ তৈরি হয়েছিল। প্রায় হাতের মুঠোয় এসেও গিয়েছিল খেলা। কিন্তু ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার দুর্বল ব্যাটিং শেষ করে দিলে শেষ আশা। মাত্র ৪ রানে হারতে হল ভারতকে।
এদিন ব্রিসবেনে টস জিতে প্রথমে অজিদের ব্যাট করতে পাঠান ভারত অধিনায়ক। বোধহয় পিচের চরিত্রটা প্রতিপক্ষকে ব্যাট করিয়ে দেখে নিতে চাইছিলেন তিনি। তাহলে নিজেদের ব্যাট করার রণকৌশল ঠিক করতে সুবিধা হয়। ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক ফিঞ্চ (২৭) থেকে থেকে শুরু করে ক্রিস লিন (৩৭), ম্যাক্সওয়েল (৪৬), স্টোইনিজ (৩৩) একটা ঠিকঠাক রান করে দিয়ে যান দলের জন্য। ভারতের বোলিং আক্রমণে সবচেয়ে দুর্বল ঘুঁটি ছিলেন ক্রুণাল পাণ্ডিয়া। একা ক্রুণালই ৪ ওভারে ৫৫ রান দেন। এরমধ্যে ৬ খানা ছক্কা হজম করতে হয় তাঁকে। এই বড় রানটাই ফারাক গড়ে দেয়। অন্য বোলাররা যে রান আটকে রাখেন সেই রানটা একা ক্রুণালই দিয়ে যান। অজিরা ১৭ ওভারে ১৫৮ রান করে ৪ উইকেট হারিয়ে।
এরপর বৃষ্টি। বৃষ্টির পর ব্যাট করতে নেমে বিধ্বংসী চেহারা নেয় শিখর ধাওয়ানের ব্যাট। অন্যদিকে রোহিত যখন নড়বড় করছেন তখন শিখর মাঠে তুফান তুলছেন। একা শিখরই করেন ৭৬ রান। তাও মাত্র ৪২ বল খেলে। এখানেই জয়ের ভিত তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু রোহিত (৭), বিরাট (৪), রাহুল (১৩)-দের ব্যর্থতা দলের জন্য ধাক্কা হয়। যদিও এরপর ঋষভ পন্থ ও দীনেশ কার্তিক ফের ম্যাচ ঘুরিয়ে ভারতে দিকে নিয়ে আসেন। ১২ বলে একসময়ে দরকার ছিল ২৪ রান। যা তোলা টি-২০-র যুগে অসম্ভব কিছু নয়। আর যেখানে অজি বোলাররা কিছুটা ছন্দ হারিয়েছেন। কিন্তু এই অবস্থায় ঋষভ পন্থের আউট হওয়া খেলার মোড় ঘোরায়। ব্যাট করতে নেমে ক্রুণাল পাণ্ডিয়া কার্যত অজি বোলিং আক্রমণের মুখে খেই হারান। মাত্র ৪ বল খেলে ২ রান করেন তিনি। তারমধ্যেই একবার তাঁকে গ্লাভস বদলাতে দেখা যায়। বোঝাই যাচ্ছিল ফিনিশ করা দূরে থাক, অজি বোলিংয়ের সামনে আতঙ্কে ভুগছেন তিনি। খেলার ওই অবস্থায় ৪ বল নষ্ট করা ভারতের জন্য ভয়ংকর হয়। এরপর কার্তিকও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন। তারপর আর খেলায় কিছু বাকি ছিলনা। অবশেষে ভুবি-কুলদীপ লড়েও ৪ রান বাকি থাকতে ওভার শেষ হয়ে যায়। ভারত ১৭ ওভারের শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে করে ১৬৯ রান। বোলিং, ব্যাটিং ২ ক্ষেত্রেই ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার খেলা কিন্তু এদিন ভারতের পরাজয়ের এক অন্যতম কারণ হয়ে রইল। ক্রিকেট বোদ্ধাদের প্রশ্ন অস্ট্রেলিয়ার মত একটা দলের বিরুদ্ধে তাদের মাঠে ক্রুণাল পাণ্ডিয়া কী এখনও ভারতীয় দলে খেলার যোগ্য হয়ে উঠতে পেরেছেন? ৪ ওভার বল করে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট তোলা অজি স্পিনার অ্যাডাম জাম্পাকে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হিসাবে বেছে নেওয়া হয় এদিন।