৩ ম্যাচের একদিনের সিরিজ। প্রথম ২টো ম্যাচের শেষে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ২ দলই ১টি করে ম্যাচ জিতেছে। ফলে সিরিজের শেষ ম্যাচটা কার্যত ফাইনালের চেহারা নিল। যে জিতবে সিরিজ তার। মঙ্গলবার অ্যাডিলেডের মাঠে সিরিজে টিকে থাকা লড়াইয়ে নামে ভারত। অন্যদিকে এদিন জিতলে শেষ ম্যাচের জন্য অপেক্ষা না করেই সিরিজ পকেটে পুরতে পারত অস্ট্রেলিয়া। সেই হিসাবে চাপ একটু বেশি ছিল ভারতের জন্য। এদিন টসও জেতে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। হয়তো প্রথম ম্যাচের কথা মাথায় রেখেই। কারণ প্রথম ম্যাচে তারা প্রথমে ব্যাট করার পর ভারত ব্যাট করতে নেমে ধারে কাছেও পৌঁছতে পারেনি। কিন্তু সব দিন ভারত একই খেলেনা। এটা বোধহয় আন্দাজ করতে পারেনি অজিরা।
ব্যাট করতে নেমে ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পরে যায় অস্ট্রেলিয়া। ত্রাতার ভূমিকা নেন মার্শ। একাই প্রায় ম্যাচ ধরে রাখেন তিনি। অধিনায়ক ফিঞ্চ ৬ রানে ও কেরি ১৮ রানে ফেরার পর খোওয়াজার সঙ্গে জুটি বেঁধে মার্শ রান তুলতে থাকেন। খোওয়াজা ২১ রানে ফেরার পর হ্যান্ডসকম্ব (২০) ও স্টোইনিজ (২৯)-এর সঙ্গে জুটি বাঁধতে থাকেন মার্শ। কিন্তু একা একটা দিক ধরে রেখেছিলেন। পরে ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে তাঁর জুটি অস্ট্রেলিয়ার রানকে ভাল অবস্থায় নিয়ে চলে যায়। ম্যাক্সওয়েল ৪৮ রান করে আউট হওয়ার পর খেলার প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে ১৩১ রান করে আউট হন মার্শ। অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারের শেষে তোলে ২৯৮ রান। আগের দিনের চেয়েও রান অনেকটাই ছিল বেশি।
২৯৯ রানে পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা। জিততে গেলে ওই রান করতে হবে। শুরুতেই শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা ভাল রান তুলতে শুরু করেন। ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশনকে কাজে লাগিয়ে রান তুলতে থাকেন তাঁরা। শিখর ৩২ রান করে ফেরার পর বিরাট কোহলির সঙ্গে জুটি বাঁধেন রোহিত। এদিন বিরাট যে রান করতে নেমেছেন তা তাঁর প্রথম থেকে খেলার ধরণ থেকেই পরিস্কার। ধরে ব্যাট করছিলেন। মারার বল ছাড়া জাজমেন্ট মাথায় রাখছিলেন। বল বেশি খেলে রান কম। তবু তাড়াহুড়ো ছিলনা। এদিকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে রোহিত হাতে ধরা পড়ে আউট হন। বিরাট জুটি বাঁধেন রাইডুর সঙ্গে। কিন্তু এদিন শুরু থেকে আম্বাতি রাইডু নড়বড় করছিলেন। কয়েকবার ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। মাঠে বিরাটকে তাঁকে বোঝাতেও দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত ২৪ রান করে ফেরেন তিনি। বিরাটের সঙ্গে জুটি বেঁধে নামেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথম ম্যাচে অনেক বল নষ্ট করে সমালোচনার মুখে পড়া ধোনি এদিন কিন্তু শুরু থেকেই ব্যাট করতে থাকেন চুটিয়ে। রান উঠতে থাকে ২ জনের ব্যাট থেকেই। ক্রমে খেলা ভারতের দিকে ঢলে পরতে থাকে। ৪৩.৪ ওভারে যখন বিরাট ১০৪ রান করে আউট হন তখনও ভারতকে করতে হত ৫৭ রান। হাতে ৩৮ বল। এই অবস্থায় ধোনির সঙ্গে জুটি বাঁধেন ম্যাচ উইনার হিসাবে পরিচিত দীনেশ কার্তিক। আর তিনি যে সত্যিই ম্যাচ উইনারের ভূমিকা নেন খেলার শেষে এসে তা এদিনও তিনি দেখিয়ে দিলেন। ১৪ বল খেলে করলেন ২৫ রান। যা ওই অবস্থায় ভারতের জয়ের সব রাস্তা মসৃণ করে দেয়। ৪ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ভারত। জেতে ৬ উইকেটে। ধোনি অপরাজিত থেকে করেন ৫৫ রান। এদিন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন বিরাট কোহলি।