নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫ ম্যাচের একদিনের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতে নিল ভারত। রবিবার ওয়েলিংটনের ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু ব্যাট নেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি বলেই মনে হচ্ছিল। কারণ ব্যাট করতে নেমে থেকে পরপর উইকেট পড়তে শুরু করে ভারতের। দলগত মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট হারানো ভারতীয় দলের কাছে কার্যত চতুর্থ ম্যাচের স্মৃতি ফিরে এসেছিল। রোহিত শর্মা (২), শিখর ধাওয়ান (৬), শুভমান গিল (৭) ও ধোনি (১) ফেরার পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন এই ম্যাচে আর ভারতের কিছুই করার নেই। সিরিজ জিতবে বটে কিন্তু শেষ ২টি ম্যাচে লজ্জার হার হেরে।
এই অবস্থায় ম্যাচের হাল ধরেন আম্বাতি রাইডু ও বিজয় শঙ্কর। ২ জনেই ধরে খেলে ক্রমশ ভারতকে একটা সম্মানজনক রানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। তবে রান ওঠার গতি অনেকটাই মন্থর হয়ে পড়ে। ৪৫ রান করে বিজয় ফেরার পর কেদার যাদব আম্বাতির সঙ্গে জুটি বাঁধেন। এদিন আম্বাতি রাইডু করেন ৯০ রান। ম্যাচের শেষের দিকে ২২ বলে ৪৫ রানের একটা ঝোড়ো ইনিংস খেলে ভারতকে একটা চ্যালেঞ্জিং স্কোর খাড়া করে দিতে সাহায্য করেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। ৫০ ওভার শেষ হতে ১ বল বাকি থাকতেই সব উইকেট পড়ে যায় ভারতের। রান হয় ২৫২।
খুব পাহাড় প্রমাণ স্কোরও নয়। আবার খুব সহজও নয়। ২৫৩ রান করতে পারলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে নিজেদের মাঠেই নড়বড় করতে থাকে নিউজিল্যান্ড। ৩৮ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারায় তারা। ফেরেন নিকোলস (৮), মুনরো (২৪) ও টেলর (১)। এখান থেকে ম্যাচের মোড় ঘোরাতে শুরু করেন কিউয়ি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও ল্যাথাম। দুরন্ত জুটি বেঁধে রান তুলতে শুরু করেন তাঁরা। এই জুটি আর কিছুক্ষণ টিকলে ম্যাচ নিউজিল্যান্ড প্রায় মুঠোয় করে ফেলত। কিন্তু ঠিক সেই সময় কেনকে ফেরান কেদার। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। কেন ৩৯ রান করে ফেরার পর ছন্দ হারান ল্যাথামও। তিনিও ফেরেন ৩৭ রান করে।
এখান থেকে আবার ম্যাচের হাল ধরেন নীশাম ও গ্র্যান্ডহোম। যদিও গ্র্যান্ডহোম ১১ করে ফেরার পর স্ট্যান্টনারকে নিয়ে নিশাম কিছুক্ষণ লড়াই দেন। নিশাম ফেরেন ৪৪ রান করে। এটাই নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত স্কোর। এরপর একে একে স্যান্টনার, অ্যাস্টল ও শেষে বোল্ট আউট হয়ে ফেরেন। নিউজিল্যান্ডের ইনিংস ৪৪.১ ওভারে ২১৭ রান করেই শেষ হয়ে যায়। ভারত জেতে ৩৫ রানে। এই একদিনের ম্যাচের সিরিজে নিজেদের মাঠেই নিউজিল্যান্ড ৫টি ম্যাচের একটিতেও ৫০ ওভার খেলতে পারেনি।
এদিনের জন্য ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন আম্বাতি রাইডু। সিরিজের সেরা হন মহম্মদ সামি। নিউজিল্যান্ডের এই একদিনের সিরিজ মহম্মদ সামির জীবনের এক অন্যতম সফল অধ্যায় হয়ে রইল। চতুর্থ ম্যাচে লজ্জার হার না হারলে এই সিরিজ নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে শেষ করতে পারত ভারত। এবার টি-২০ সিরিজ। ৩ ম্যাচের সিরিজ হবে ৬, ৮ ও ১০ ফেব্রুয়ারি। এবার দেখার এই সিরিজে ভারত নিউজিল্যান্ডে কতটা সফল হয়।