খেলা যাতে জেতা যায় তার সবটুকু সাজিয়ে দিয়েছিলেন বুমরাহ। শেষ ওভারে ৬ বলে ১৪ রান দরকার ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ক্রিজে ২ জন ব্যাটসম্যানই সবে নেমেছেন। এই অবস্থায় দরকার ছিল শুধু একটু সতর্ক বোলিংয়ের। ওভার করতে আসেন উমেশ যাদব। ২ খানা ৪ খাওয়ার পর শেষ বলে অজিদের দরকার ছিল ২ রান। সেখানেও বোলিং বিপর্যয়ের শিকার হল ভারত। ২ রান অনায়াসে ছুটে সম্পূর্ণ করে শেষ বলে ম্যাচ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ভিলেন হয়ে রইলেন উমেশ।
রবিবার টস জিতে বিশাখাপত্তনমে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। কঠিন পিচে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই নড়বড় করতে থাকে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ। প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান ওঠার পর কিছুটা রানে গতি আনার চেষ্টা শুরু করেন রোহিত শর্মা ও কেএল রাহুল। একটি চার মারলেও রোহিত বোধহয় এদিন নিজেকে সেট হওয়ার সময় না দিয়েই চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যা তাঁর স্বভাববিরুদ্ধ। তার ফলও ভুগতে হয়। ৫ রান করে চার মারতে গিয়ে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। এরপর বিরাট ও কেএল রাহুল বেশ কিছুক্ষণ ভাল ব্যাটিং করলেও সেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে ফেলেন বিরাট (২৪)। দলের ৬৯ রানের মাথায় বিরাট আউট হওয়ার পর ভারতীয় ব্যাটিংয়ে কার্যত ধস নামে।
নিজের ভুলে রান আউট হন ঋষভ পন্থ (৩)। এরপর ধোনি নেমে রাহুলের সঙ্গে জুটি বাঁধলেও ৫০ রান করা সেট ব্যাটসম্যান রাহুল বড় রান হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। নামেন দীনেশ কার্তিক। কিন্তু কুল্টারনাইলের ওই ওভারেই বোল্ড হয়ে ফেরেন দীনেশ (১)। নামেন ক্রুণাল পাণ্ডিয়া। কিন্তু তিনিও বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন। ক্রুণাল ফেরেন ১ রান করে। উমেশ যাদবকেও ফেরাতে সময় নেয়নি অজিরা। ২ রান করে এলবিডব্লিউ হন উমেশ। এরপর যুজবেন্দ্র চাহলকে নিয়ে ব্যাট শুরু করেন ধোনি। চাহলকে নন স্ট্রাইকার এন্ডে রেখে নিজে ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফলে ১ রান গুলো ছেড়ে দেন ধোনি। শেষ ওভারে একটা ছক্কা হাঁকান তিনি। ওই টুকুই। ভারত ১২৬ রান করে শেষ করে তাদের ২০ ওভার। একা কুল্টারনাইলই ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ধস নামিয়ে দেন।
১২৭ রান করলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অজিরা। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ০ রানে এবং স্টোইনিজ ২ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। দলের ৫ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এই অবস্থায় শর্ট ও ম্যাক্সওয়েল ম্যাচের হাল ধরেন। এঁদের ব্যাটিংয়ের জোরে অস্ট্রেলিয়া ছোট রান তাড়া করতে নেমে ভাল অবস্থায় পৌঁছে যায়। দলের ৮৯ রানের মাথায় ম্যাক্সওয়েল (৫৬) যখন আউট হন তখন ম্যাচ হাতের মুঠোয় রয়েছে অজিদের। কিন্তু এই অবস্থা থেকে ভারতীয় বোলাররা ম্যাচ ঘোরাতে থাকেন।
যত বল তত রান দরকার এই অবস্থায় এগোতে থাকে ম্যাচ। পড়তে থাকে উইকেটও। শর্ট (৩৭) ও টার্নার (০)পরপর আউট হন। ১৯ তম ওভার করতে আসেন বুমরাহ। তখন দরকার ১৬ রান ১২ বলে। এমন কিছু নয়। এই অবস্থায় বুমরাহ কামাল দেখাতে শুরু করেন। ওই ওভারেই মাত্র ২ রান দিয়ে হ্যান্ডসকম্ব (১৩) ও কুল্টারনাইল (৭)-কে তুলে নিয়ে প্রবল চাপে ফেলে দেন অজিদের। কিন্তু শেষ ওভারে সেই চাপ কামিন্স ও রিচার্ডসন মিলে দূর করে দেন উমেশ যাদবের জঘন্য বোলিংকে কাজে লাগিয়ে। ভারতের হাতের মুঠোয় চলে আসা ম্যাচ উমেশের বোলিংয়ে হাত ফস্কাল। অস্ট্রেলিয়া জিতল ৩ উইকেটে। পরের টি-২০ বেঙ্গালুরুতে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি।