এখনও যে তিনি মাঠে থাকলে কামাল দেখাতে পারেন। তিনি মাঠে থাকলে যে অন্য প্রান্তে দাঁড়ানো ব্যাটসম্যানও অন্য উদ্যমে খেলতে পারেন। তিনি মাঠে থাকলে তিনি খেলার লাগামটা ধরে রাখেন। তা ফের একবার প্রমাণ করলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তাঁর সঙ্গে এদিন নিজের জাত আরও একবার চিনিয়ে দিলেন কেদার যাদবও। এমন এক অলরাউন্ডারের এমন দুরন্ত পারফর্মেন্স বিশ্বকাপের আগে ভারতের জন্য স্বস্তিরও। সব মিলিয়ে ধোনি-কেদার যুগলবন্দির কাঁধে ভর করে পরপর ২টো টি-২০ হারার পর অজিদের একদিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারাতে সক্ষম হল বিরাটের ভারত। এদিন খেলার ১০ বল বাকি থাকতে ভারত ৬ উইকেটে জিতে নিলে খেলা।
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ফর্মে না থাকা অজি অধিনায়ক ফিঞ্চ শুরুতেই আউট হয়ে ফেরেন। ফিঞ্চ শূন্য রানে ফেরার পর খোওয়াজা ও স্টোইনিজ জুটি ধরে খেলে অজি ইনিংসকে ক্রমশ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে থাকেন। কিন্তু ভারতীয় স্পিন আক্রমণের জোড়া ফলা কেদার যাদব ও কুলদীপ যাদব ২ জনকে তুলে নেন। কেদার আউট করেন স্টোইনিজকে (৩৭)। কুলদীপ আউট করেন খোওয়াজাকে (৫০)। এঁরা ফেরার পর হাল ধরেন টি-২০তে অজিদের সুপার হিরোয় পরিণত হওয়া ম্যাক্সওয়েল ও হ্যান্ডসকম্ব। ম্যাক্সওয়েল ৪০ রান করে ও হ্যান্ডসকম্ব ১৯ রান করে ফেরেন। ফেরেন টার্নারও (২১)। স্লগ ওভারে কুল্টারনাইল ও ক্যারি অজিদের সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেন। কুল্টারনাইল করেন ২৮ রান। শেষ পর্যন্ত ৩৬ রান করে অপরাজিত থাকেন ক্যারি। ৫০ ওভার ব্যাট করে ২৩৬ রান করে অস্ট্রেলিয়া।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শিখর ধাওয়ানের উইকেট হারায় ভারত। শিখর শূন্য রানে আউট হন। ম্যাচের হাল ধরেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। এদিন রান করতে রীতিমত লড়াই করছিলেন রোহিত। নিজের সেই মারকাটারি ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি তিনি। দলগত ৮০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৪ রান করে ফেরেন কোহলি। তাঁর আউট হওয়ার কিছু পরেই ৩৭ রান করে ফেরেন রোহিত। ভারতের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। সেই পরিস্থিতিতে দ্রুত ১৯ রান করে ফেরেন রাইডু। ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর একদিনের ক্রিকেটে সহজ টার্গেট ২৩৭ রানও ভারতের জন্য কার্যত পাহাড় প্রমাণ ঠেকছিল। ফলে অতি সন্তর্পণে ব্যাট করতে শুরু করেন ধোনি ও কেদার যাদব।
প্রথমে ধরে খেলে নিজেদের সেট করা। ধোনির ক্রমাগত কেদারকে পরামর্শ দেওয়া। নিজেও রানের গতিকে ধরে রাখা। কেদার তো ফর্মে ছিলেনই। এই ২ তারকা এদিন খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন। ৪ উইকেট হারানোর পর আর কোনও উইকেট না পড়ে ম্যাচ জয় পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়ে ভারতকে জিতিয়ে ফিরলেন ধোনি-কেদার। কেদার যাদব করলেন অপরাজিত ৮১ রান। আর মহেন্দ্র সিং ধোনি করলেন অপরাজিত ৫৯ রান। এদিনের জয়ের হাত ধরে ৫ ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।