দক্ষিণ আফ্রিকাকে মোহালির মাঠে কার্যত দাঁড়াতেই দিল না ভারত। যদিও এদিন ভারতীয় স্কোয়াডে তরুণ মুখ ছিল একাধিক। সুযোগ পান ওয়াশিংটন সুন্দর, দীপক চাহর, নভদীপ সাইনিরা। ভাল বোলিং করেন এঁরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ১৪৯ রানে বেঁধে ফেলে ভারতীয় দল। যা বর্তমানে টি-২০-তে হাত পাকানো ভারতীয় স্কোয়াডের জন্য খুব সমস্যার ছিলনা। সমস্যা হয়ওনি। খেলা এগিয়েছে। রান উঠেছে। আর জয় এসেছে। কোনও তাপ উত্তাপ খেলায় তৈরি হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা এদিন না ব্যাটিংয়ে আর না বোলিংয়ে ভাল কিছু দেখাতে পেরেছে। তবে এদিন ব্যাটিংয়ে বিরাট ছিলেন অনবদ্য। ম্যান অফ দ্যা ম্যাচও হন তিনিই। অটুট জোড়ি পুরস্কার জেতে বিরাট-শিখর জুটি। ড্রিম ইলেভেন গেম চেঞ্জার অফ দ্যা ম্যাচও হন বিরাটই।
দক্ষিণ আফ্রিকা এসেছে ভারত সফরে। প্রথমেই ৩টি টি-২০ ম্যাচ। যার প্রথম ম্যাচ গত রবিবার ছিল ধর্মশালায়। যা বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গেছে। ৩ ম্যাচের সিরিজে বাকি ছিল ২টি ম্যাচ। যার ১টি বুধবার সন্ধেয় মোহালিতে খেলা হল। টস জিতে এদিন প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। একগুচ্ছ নতুন মুখ নিয়ে শুরু হয় খেলা। হেনড্রিকস (৬) দ্রুত ফিরলেও ভাল ব্যাট করছিলেন অধিনায়ক ডি কক ও বাভুমা। ডি কক ৫২ রান করে ফেরেন। তাঁর পরেই খুব দ্রুত ফেরেন ফন ডার ডাসেন (১)। বাভুমারে সঙ্গে মিলার কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেন ম্যাচের। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার রান কমই উঠছিল। ফলে রানের গতি বাড়ানোরও চেষ্টা করেন এঁরা। কিন্তু ৪৯ রান করে ফেরেন সেট ব্যাটসম্যান বাভুমা। তারপর ১৮ রান করে হার্দিকের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মিলারও। শেষে প্রিটোরিয়াস ও ফেলুকওয়াও কিছুটা মারার চেষ্টা করেন শেষে পৌঁছে। ভারতের ২০ তম ওভারে নভদীপ সাইনি বল করতে আসেন। ওই ওভার থেকে ১৬ রান তুলে প্রোটিয়ারা একটা সম্মানজনক স্কোর খাড়া করে। ১৪৯ রান করে ২০ ওভারে।
১৫০ রান করলে জিতবে। আইপিএল খেলা ভারতীয় দলের কাছে এই রান তোলা কঠিন হওয়ার কথা ছিলনা। কারণ এখন টি-২০-তে ২০০ রানেরও ওপর ওঠে। তা তাড়া করে জেতেও অনেক দল। সে তুলনায় ১৫০ টার্গেট নেহাতই নগণ্য। ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মা প্রথম দিকটায় চোখ সেট করার চেষ্টা করেন। যা তিনি করেই থাকেন। কিন্তু ১২ রান করে ফেরেন তিনি। এই ১২ রান তিনি করেন ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে। ফেলুকওয়াও এর বলে রোহিত ফেরার পর খেলার হাল ধরেন শিখর ধাওয়ান ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ধাওয়ান-বিরাট জুটি অনেকটা খেলাকে টেনে নিয়ে যান। কিন্তু ধাওয়ানের একটা জোড়াল শট বাউন্ডারি লাইনের কাছে মিলারের হাতে ধরা পড়ে যায়। ম্যাচের সেরা ক্যাচ হয়ে থাকবে এটি। ধাওয়ান করেন ৪০ রান। ধাওয়ান আউট হওয়ার পর বিরাটের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ঋষভ পন্থ। কিন্তু সহজ ক্যাচ তুলে মাত্র ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। বিরাট এবার সঙ্গে পান শ্রেয়স আইয়ারকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভাল খেলা দেখানোর পর এদিনও শ্রেয়স ছিলেন নিজের ছন্দে। আর বিরাট কোহলি তো একদিকে দাঁড়িয়েই ছিলেন।
বিরাট-শ্রেয়স জুটিই প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়। বিরাট অপরাজিত থাকেন ৭২ রান করে। শ্রেয়স অপরাজিত থাকেন ১৬ রান করে। ভারত ম্যাচ জেতে ৭ উইকেটে। ৬ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় ভারত। ৩ ম্যাচের সিরিজে ২ ম্যাচের শেষে ১-০-তে এগিয়ে গেল ভারত। শেষ টি-২০ আগামী রবিবার। ওই ম্যাচ ভারত জিতলে সিরিজ ভারতের। আর যদি হারে তাহলে সিরিজ অমীমাংসিত। খেলা ভেস্তে গেলেও ভারতই নিয়ে যাবে পেটিএম ট্রফি।