টেস্ট যে ৫ দিনের হয় সেটাই ভুলতে বসেছেন অনেকে। কারণ পঞ্চম দিন দূরে থাক ভারত যেভাবে হেলায় টেস্ট জিতছে তাতে ৩ দিনেই শেষ হচ্ছে খেলা। প্রথম দিনেই পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে ভারতের জয়। বাকিটা ২টি করে ইনিংস শেষ করা। প্রতিপক্ষের ২০টি উইকেট ফেলা। নিজেরা ব্যাট করে রান তোলা। এসবে লেগেই যায়। যেটুকু সময় না দিলেই নয়, সেটুকুই সময় নিচ্ছে বিরাট ব্রিগেড। গোলাপি বলের ঐতিহাসিক টেস্টেও সেই প্রবণতার নড়চড় হল না।
একদম নতুন রংয়ের বলেও সমান স্বচ্ছন্দ ভারত। সে বোলিংই হোক বা ব্যাটিং। আর এই ঐতিহাসিক টেস্টে যিনি হিরের দ্যুতির মত ঝলমল করলেন তিনি বিরাট কোহলি। ভারতের প্রথম গোলাপি বলের টেস্টেও নিজের শতরানের কীর্তি লিখে দিলেন তিনি।
অসামান্য ব্যাট করে ১৩৬ রান করেন বিরাট। যার মধ্যে ১৮টি চার রয়েছে। বিরাটের একটি ড্রাইভ দেখে বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা পর্যন্ত হাততালি দিয়ে ওঠেন।
দ্বিতীয় দিনে ভারতের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বিরাটের ব্যাটিং। ঐতিহাসিক ম্যাচে তাঁর শতরান। সেই সঙ্গে অজিঙ্কা রাহানের ৫১ রানের ইনিংস। বিকেল নেমে আসার আগেই এদিন ভারত ৩৪৭ রান তোলে ৯ উইকেটে। এখানেই ডিক্লেয়ার করে দেন বিরাট কোহলি। অত্যন্ত কুশলী সিদ্ধান্ত। কারণ বিকেলের আলো আর সন্ধের মুখে জ্বলে ওঠা ফ্লাড লাইটে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠানো মানেই তাদের বেশ কিছু উইকেট দ্রুত ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করা। ২৪১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য যেমন আশা করা হয়েছিল তার চেয়েও দ্রুত গতিতে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে থাকেন সাদমান ইসলাম (০), ইমরুল কায়েস (৫), অধিনায়ক মমিনুল হক (০), মহম্মদ মিঠুন (৬)-রা।
বাংলাদেশের অধিনায়ক মমিনুল হক তো ২টি ইনিংসেই ০ রান করে ফিরলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের ১৩ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই সময় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন দ্বিতীয় দিনেই শেষ হবে ইডেন টেস্ট। কিন্তু এই অবস্থায় দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ।
দুজনে ভালই টানছিলেন। কিন্তু হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন মাহমুদুল্লাহ। তখন তাঁর রান ছিল ৩৯। এরপর মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে খেলতে শুরু করেন মুশফিকুর। মিরাজ ফেরেন ১৫ রান করে। দিনের শেষে গিয়ে ১১ রান করে ফেলেন তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় দিনের শেষে ৫৯ রান করে ক্রিজে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
এখনও ভারতের চেয়ে ৮৯ রান দূরে রয়েছে বাংলাদেশ। হাতে রয়েছে ৪ উইকেট। ৮৯ রান করার আগেই যদি এই ৪ উইকেট তারা হারায় তবে ভারতকে আর দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাট করতে নামতে হবে না। তবে যাই হোক ভারতের জয় এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। এটাও ঠিক যে ইডেনের গোলাপি টেস্ট চতুর্থ দিনের মুখ দেখবে না। আদৌ তৃতীয় দিনের সন্ধে দেখে কিনা সেটাও যথেষ্ট সন্দেহের।