টি-২০ সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছে বিনা যুদ্ধে হার স্বীকারের দলে তারা পড়ে না। একদিনের সিরিজ শুরুর আগের দিন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক কায়রন পোলার্ড জানিয়েছিলেন ভারতের বিরুদ্ধে লড়ার গেমপ্ল্যান তাঁরা তৈরি করে ফেলেছেন। সেই গেমপ্ল্যান অবশ্য তিনি পরিস্কার করেননি। তবে এদিন মাঠে বুঝিয়ে দিলেন তাঁদের হোমওয়ার্ক ঠিকঠাক ছিল। একদিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচে এদিন চেন্নাইতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল প্রায় সব বিভাগেই। যেমন ভাল বল করল তারা। তেমনই চোখ জুড়নো ব্যাটিং। শুরুতে বিরাট, রাহুল, রোহিতকে ফিরিয়ে চাপ তৈরির পাশাপাশি হেটমায়ার ও হোপ এদিন অনবদ্য ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করেন। ম্যাচের সেরাও হন হেটমায়ার। যাঁর ব্যাট এদিন আগুন ঝরিয়েছে। হোপ ও হেটমায়ার ২ জনেই সেঞ্চুরি করেন।
টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ২ ইন্দ্রপতনের শিকার হয় ভারত। ৬ রান করে কেএল রাহুল ও ৪ রান করে অধিনায়ক বিরাট কোহলি প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ম্যাচের হাল ধরেন রোহিত শর্মা ও শ্রেয়স আইয়ার। কিন্তু ২ উইকেট দ্রুত হারিয়ে রানের গতি শ্লথ হয়ে যায়। রোহিত শর্মার ব্যাট থেকেও রান ওঠেনি সেভাবে। রোহিত ৫৬ বল খেলে ৩৬ রান করে ফেরেন। এরপর ঋষভ পন্থ ও শ্রেয়স আইয়ার ভারতের রানকে টেনে নিয়ে যাতে থাকেন। কার্যত এই ২ ব্যাটসম্যানের চওড়া ব্যাটে ভরসা করেই ভারত নির্ভরযোগ্য স্কোরের দিকে ক্রমশ এগোতে থাকে।
শ্রেয়স ফেরেন ৭০ রান করে। ঋষভ ফেরেন ৭১ রান করে। শেষের দিকে কেদার যাদব ও রবীন্দর জাদেজা দলের স্কোরে আরও কিছু রান যোগ করেন। কেদার ৪০ ও জাদেজা ২১ রান করে ফেরেন। ৫০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৮৭ রান তোলে ভারত। ৫০ ওভারের ম্যাচে এই রান খুব খারাপ নয়। চ্যালেঞ্জিংও বটে। ২৮৮ রান করলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে দীপক চাহরের বল যথেষ্ট সুইং নিতে শুরু করে। সেই চাপে ক্যারিবিয়ান ওপেনার শাই হোপ ও অ্যামব্রিসকে খেলতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। ৯ রান করে ফেরেন অ্যামব্রিস। ম্যাচের হাল ধরেন হোপ ও হেটমায়ার।
হোপ-হেটমায়ার জুটি ভারতীয় বোলিংয়ের জন্য রীতিমত আতঙ্কের হয়ে দাঁড়ায়। ২ ক্যারিবিয়ান তরুণ তারকাকে ঠেকাতে হিমসিম খেতে হয় ভারতীয় বোলারদের। কিন্তু এঁদের রান তোলা তাতে থামেনি। বিশেষত এদিন বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন হেটমায়ার। হেটমায়ার-হোপ জুটি দলের রানকে ২২৯-এ টেনে নিয়ে যায়। যারমধ্যে হেটমায়ার করেন ১০৬ বল খেলে ১৩৯ রান। যারমধ্যে ৭টি ছক্কা ও ১১টি চার মারেন তিনি। এক মনে রাখার মত অসাধারণ ইনিংস খেলে যান হেটমায়ার।
শাই হোপকে সঙ্গত দিতে মাঠে নামেন পুরান। কিন্তু খেলা ততক্ষণে হেটমায়ারের দাপটে ক্যারিবিয়ানদের দিকে ঝুঁকে গেছে। এরপর জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। আর তা হোপ তাঁর নিজস্ব ব্যাটিং দক্ষতায় একা হাতেই তুলে নেন। দারুণ সঙ্গত দেন পুরান। হোপ ১০২ রান করে অপরাজিত থাকেন। ১৩ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল তারা। আগামী বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচ বিশাখাপত্তনমে। এই ম্যাচেও এদিনে ফলাফলের পুনরাবৃত্তি করতে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ জিতে যাবে। অন্যদিকে সিরিজের বাকি ২টি ম্যাচেই জিততে হবে ভারতকে। তবে সিরিজ জয় করতে পারবে তারা।