পরপর ২টি সুপার ওভারে গড়ানো ম্যাচ জিতে ভারত যেমন মনোবল অনেকটা সঞ্চয় করেছিল, তেমনই জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছেও ম্যাচ টাই ও সুপার ওভারে হার নিউজিল্যান্ডের মনোবল তলানিতে ঠেকিয়েছিল। সিরিজের শেষ ম্যাচে তারই ছাপ স্পষ্ট দেখা গেল। নিউজিল্যান্ড ফের হারল। পরপর ৫টি ম্যাচ। তাও তাদের নিজেদের মাটিতে। ভারত গড়ল রেকর্ড। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে এই প্রথম ভারত তাদের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ জিতল। শুধু জিতলই না, হোয়াইটওয়াশ করে দিল। শেষ ম্যাচে অনেকটা ফর্ম ফিরে পেলেন ভারতের ১ নম্বর পেসার যশপ্রীত বুমরাহ। ম্যাচের সেরাও হলেন তিনি।
বে ওভালের পিচে রবিবার সিরিজে পঞ্চম ও শেষ টি-২০-তে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। পরে ব্যাট করে ভারতের করা যে কোনও রানই তাড়া করতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছে নিউজিল্যান্ড। তাদের সেই দুর্বল জায়গাটাকে কাজে লাগাতেই হয়তো প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। নিউজিল্যান্ড যেমন এই ম্যাচ জিতে সিরিজে অন্তত একটা জয় দিয়ে মুখরক্ষার চেষ্টা করছিল। সেখানে ভারত চাইছিল নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করতে। এদিন ভারতের অধিনায়ক কোহলি না থাকায় অধিনায়কত্ব করছিলেন রোহিত শর্মা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কেএল রাহুল ভাল শুরু করলেও ব্যর্থ হন সঞ্জু স্যামসন। ২ রানে ফেরেন তিনি। এরপর রোহিত-রাহুলের যুগলবন্দি মাঠে রাজত্ব করতে থাকে। রাহুল ৪৫ রান করে ফেরেন। এরপর রোহিত ও শ্রেয়স আইয়ার হাল ধরেন। এরপর ৪১ বলে ৬০ রান করা রোহিত আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন। একটা ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাঁ পায়ের কাফ মাসলে চোট পান তিনি। বাধ্য হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। শিবম দুবে নামেন। কিন্তু ৫ রান করে ফেরেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন শ্রেয়স আইয়ার। তিনি করেন ৩৩ রান। মণীশ পাণ্ডে ১১ রান করে অপরাজিত থাকেন। ভারত ২০ ওভারে করে ১৬৩ রান।
টি-২০-তে ১৬৪ রান খুব বিশাল রান নয়। কিন্তু কিউয়িদের মনোবলের অবস্থা হয়তো এতটাই খারাপ যে মাত্র ১৭ রান করতেই ৩টি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। গাপটিল ২ রানে, মুনরো ১৫ রানে ও ব্রুস ০ রানে আউট হওয়ার পর ম্যাচের হাল ধরেন সিফার্ট ও টেলর। শুধু হালই ধরেননি। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তাঁরা। কিন্তু যখনই নিউজিল্যান্ড ম্যাচে ফেরে তারপরই তারা ফের কোথায় হারিয়ে যায়। এদিনও ঠিক তাই হল।
সিফার্ট ও টেলর যখন সহজেই ম্যাচ বার করে নেওয়ার পরিস্থিতিতে পৌঁছে যান ঠিক তখনই সিফার্ট ৫০ রান করে ফেরেন। আর সেখান থেকেই আচমকা কিউয়িদের আয়ারাম গায়ারাম শুরু হয়। পরপর উইকেট পড়তে থাকে। ৪৪ বলে ৪৮ রান করলে জিতবে এমন একটা ম্যাচকে ক্রমশ হারের দিকে নিয়ে যেতে থাকে তারা। অন্যদিকে জ্বলে ওঠেন বুমরাহ। এদিন বুমরাহ ভয়ংকর এক দানবের মত কিউয়ি ব্যাটসম্যানদের কাবু করেন। মিচেল, স্যান্টনার ৬, কুগেলজিন ০ করে ফেরার পর শেষ ভরসা টেলরও ৫৩ রান করে আউট হন। কেন উইলিয়ামসন না থাকায় অধিনায়ক সাউদি ফেরেন ৬ রান করে। শেষে সোধি ১৬ রান করে অপরাজিত থাকলেও ম্যাচ হাতছাড়া হয়। ১৫৬ রানেই শেষ হয় ২০ ওভার। প্লেয়ার অফ দ্যা সিরিজ হয়েছেন কেএল রাহুল।