মুখরক্ষার ম্যাচে জয় পেল বিরাটবাহিনী
সিরিজ হারলেও হোয়াইটওয়াশটা কোনওরকমে বাঁচাতে পারল ভারত। একদিনের সিরিজের শেষ ম্যাচে জয় পেল বিরাটবাহিনী।
ক্যানবেরা : সিডনিতে পরপর ২টো ম্যাচ হেরে একদিনের সিরিজ হাতছাড়া হয়েই গিয়েছিল। বুধবার তাই তৃতীয় ম্যাচটা ছিল নিছক নিয়মরক্ষার লড়াই। তবে ভারতের জন্য ছিল মুখরক্ষার লড়াই।
সিরিজ তো হাতছাড়া হয়েছে। যাতে হোয়াইটওয়াশ না হতে হয় তার জন্য মরিয়া চেষ্টা একটা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ভারতবাসী। এদিন ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ২ দলই দলে অনেকগুলি পরিবর্তন করে।
অস্ট্রেলিয়া দলে চোটের জন্য ছিলেন না ওয়ার্নার, কামিন্সের মত খেলোয়াড়। সে জায়গায় সুযোগ পান অ্যাবট ও এগার। এছাড়া স্টার্ক-এর জায়গায় সুযোগ পান ক্যামেরন গ্রিন। অন্যদিকে ভারতীয় দলে এদিন জায়গা পান নটরাজন, শুভমান গিল, শার্দূল ঠাকুর, কুলদীপ যাদব।
আগের ২টি ম্যাচ হয়েছিল সিডনিতে। এদিন খেলা হয় ক্যানবেরার মানুকা ওভাল স্টেডিয়ামে। টস জিতে এদিন প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বিরাট কোহলি।
এদিন ব্যাট করতে নেমে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মত অত ভাল শুরু পায়নি ভারত। বরং শুরুতেই শিখর ধাওয়ানের উইকেট হারায় তারা। শিখর ১৬ রানে ফেরার পর হাল ধরেন ভারতের হয়ে একদিনের আন্তর্জাতিকে ডেবিউ ম্যাচ খেলতে নামা শুভমান গিল ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
২ জনে উইকেট ধরে রেখে রান তুলতে থাকেন। তবে তা একদিনের ক্রিকেটের জন্য যথেষ্ট ছিলনা। ৩৩ রান করে ফেরেন গিল। এরপর কোহলি ও শ্রেয়স আইয়ারের জুটি বেশিক্ষণ খেলতে পারেনি। শ্রেয়স ফেরেন ১৯ রান করে।
শ্রেয়স ফেরার পর কেএল রাহুল নামলেও মাত্র ৫ রান করে ফিরতে হয় তাঁকে। বিরাট ও হার্দিক এরপর খেলা টেনে নিয়ে যান। বিরাট ফেরেন ৬৩ রান করে। ১৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত।
এখান থেকে খেলার হাল ধরেন হার্দিক ও জাদেজা। এই ২ জনই এখান থেকে খেলাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। রান উঠতে থাকে। তবে ঝোড়ো ইনিংস যাকে বলে তা শুরু হয় ৪৫ তম ওভার থেকে।
যেখানে মনে হচ্ছিল ভারতের পক্ষে ৩০০ রান ছোঁয়া অসম্ভব সেখান থেকে পাণ্ডিয়া ও জাদেজার ঝোড়ো ব্যাট খেলার মোড় ঘোরায়। ভারত শেষ করে ৩০২ রান করে। ২ জনই অপরাজিত থাকেন। পাণ্ডিয়া করেন ৯২ রান করে। জাদেজা করেন ৬৬ রান।
৩০৩ তাড়া করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। যারা আগের ২টি ম্যাচের একটিতে ৩৭৪ ও অপরটিতে ৩৮৯ রান করেছিল। তাদের জন্য ৩০৩ রান খুব একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিলনা। কিন্তু ব্যাটিংয়ে ওয়ার্নার না থাকায় একটা চাপ ছিল।
এদিন অবশ্য ফিঞ্চ অনেকবার বেঁচে যান। একের পর এক তাঁর ক্যাচ ফস্কায় ভারত। তবে লাবুশেন এদিন ওপেন করতে নেমে মাত্র ৭ রানে ফেরেন। ফিঞ্চের সঙ্গে খেলতে নামেন স্মিথ। গত ২টো ম্যাচেই শতরান করা স্মিথ কিন্তু এদিন ৭ রান করেই ফেরেন। এটা ভারতের জন্য বড় সাফল্য হয়ে সামনে আসে।
এরপর ফিঞ্চ ও হেনরিকস কিছুটা রান টেনে নিয়ে গেলেও হেনরিকস ফেরেন ২২ রানে। তারপর ৭৫ রান করে ফেরেন ফিঞ্চ। ক্যামেরন গ্রিন ও অ্যালেক্স ক্যারি বেশ কিছুটা ম্যাচ টেনে নিয়ে যান। ২১ রান করে ফেরেন গ্রিন। ক্যারি ও ম্যাক্সওয়েল এরপর ভয়ংকর হয়ে ওঠেন।
ক্যারি ৩৮ রান করে ফিরলেও ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট চলতে থাকে। যা অজিদের ম্যাচ জেতানোর জায়গায় পৌঁছে দেয়। ৩৩ বলে ৩৫ রান করতে হবে। অর্থাৎ হাতের মুঠোয় এসে পড়া পরিস্থিতিতে ম্যাক্সওয়েল বুমরাহকে ক্রিজ ছেড়ে খেলতে যান, আর বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে।
এটাই হয়তো এদিনের ম্যাচের সবচেয়ে টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়। কারণ ম্যাক্সওয়েল থাকলে এই ম্যাচ বার করাটা খুব কঠিন হতনা অস্ট্রেলিয়ার জন্য।
ম্যাক্সওয়েল ফেরার পর একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে অজিদের। ৪ রানে অ্যাবট ফেরার পরের বলেই কুলদীপের হাতে ক্যাচ তুলে ফেরেন ২৮ রান করা এগার। এরপর জাম্পা ৪ রানে ফেরার পর খেলা শেষ হয়। অস্ট্রেলিয়া হারে ১৩ রানে। তবে সিরিজ তারা ২-১ ব্যবধানে জিতে যায়।