রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ জিতল ভারত
৩৯.৪ ওভারে রবিবার সিডনির মাঠ দেখল ৩৮৯ রান। এটাই বোধহয় দর্শকদের কাছে বড় পাওনা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-২০ সিরিজ জিতে নিল ভারত।
সিডনি : মাঠে দর্শকরা সবচেয়ে বেশি খুশি হন যদি প্রচুর চার, ছয় দেখার সুযোগ পান। এখন টি-২০ ফরম্যাটে এটাই সবচেয়ে বড় পাওনা হয়। মাঠে প্রচুর রান। তাও কম বলে। ফলে ম্যাচে একটা টানটান উত্তেজনা সবসময় থেকে যায়। সেটা ভরপুর উপভোগ করলেন রবিবারের সিডনির মাঠ আর টিভির পর্দায় চোখ রাখা মানুষজন।
অস্ট্রেলিয়া যেভাবে ৩ ম্যাচের একদিনের সিরিজ প্রথম ২টো ম্যাচেই পকেটে পুরেছিল, ঠিক তেমনভাবেই টি-২০ সিরিজ প্রথম ২ ম্যাচেই জিতে নিল ভারত। এদিন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। তবে নটরাজনও হতেই পারতেন।
টস জিতে এদিন প্রথমে অজিদের ব্যাট করতে পাঠান ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ব্যাট করতে নেমে কিন্তু অজিদের ব্যাট তাণ্ডব করতে থাকে। বিশেষত এদিন ফিঞ্চহীন অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কত্ব সামলাতে আসা ম্যাথু ওয়েড ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। তিনি যেভাবে অস্ট্রেলিয়াকে ঝোড়ো শুরু দেন তাতেই বোঝা যায় এদিন অজিদের স্কোর ভারতকে ভোগাবে।
অনেকেই ভাবতে শুরু করেন এই ব্যাটিং পিচে ভারত প্রথমে ব্যাট করে বড় রান করে রাখলে এগিয়ে থাকত। এদিন ম্যাথু ওয়েড করেন ৫৮ রান। তবে শুরুতেই ৯ রান করে ফেরেন শর্ট।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ভাল খেললেও ২২ রান করে ফেরেন। স্মিথ পরপর ম্যাচে খারাপ ব্যাটিং করায় এদিন সতর্ক হয়ে খেলছিলেন। ফলে তাঁর ব্যাট থেকে ৪৬ রান পান অস্ট্রেলিয়া।
হেনরিকস ফেরেন ২৬ রান করে। শেষ ওভারে ঝোড়ো খেলে স্টোইনিজ অজিদের পৌঁছে দেন ১৯৪ রানে। ১৯৫ রান করতে হবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নামে ভারত।
শুরুটা ভারতের মোটেও ভাল হয়নি। ১৯৫ রান ২০ ওভারে করতে হবে। প্রায় ১০ করে প্রয়োজনীয় রান রেট। সেখানে প্রথম ২ ওভার থেকে আসে মাত্র ১০ রান। কিন্তু ম্যাচের ওই ২টি ওভারই যা ভারত ধরে খেলে। তারপর থেকে শুরু হয় ভারতের প্রহার।
১৮ ওভারে ১৮৫ করতে গেলে যে ব্যাটিং তাণ্ডব দেখানো দরকার তা দেখিয়েও টানা চাপে থেকেছে ভারত। রাহুল ফেরেন ৩০ রান করে।
শিখরের ব্যাট চলতে থাকে। শিখর ৫২ রান করেন। এরপর ম্যাচের হাল ধরেন বিরাট কোহলি। এদিন সঞ্জু ছোট একটি ইনিংস খেলে ১৫ রান করে যান। এরপর হার্দিক আসেন ব্যাট করতে।
বিরাট ফেরেন ৪০ রান করে। বিরাট যখন ফেরেন তখন ভারতকে করতে হত ২৩ বলে ৪৬ রান। এই অবস্থায় শ্রেয়স আইয়ার ও হার্দিকের ওপর নির্ভর করছিল ভারতের জেতা বা হারা। আর সেখানেই প্রথম ম্যাচে জয়ের গন্ধ ভরে দেন শ্রেয়স আইয়ার।
অ্যাডাম জাম্পাকে এক ওভারে একটা ছয় ও একটা ৪ মেরে খেলাকে প্রবল টানটান করে দেন শ্রেয়স। একসময় দাঁড়ায় ভারতকে ১২ বলে ২৫ রান করতে হবে।
এই অবস্থায় ১৯ তম ওভার করতে আসেন অ্যান্ড্রু টাই। তাঁর প্রথম বলে আসে ২ রান। ১১ বলে ২৩ রান দরকার এই অবস্থায় পরপর ২টি বল খেলতে পারেননি হার্দিক। ফলে চাপ বাড়ে।
৯ বলে দরকার ছিল ২৩ রান। এখানে ব্যাট পরিবর্তন করেন হার্দিক। আর তার পরের পরপর ২টো বলে আসে ২টো চার। ফলে ৭ বলে প্রয়োজনীয় রান কমে দাঁড়ায় ১৫-তে।
শেষ বলে ১ রান নিয়ে হার্দিকের হাতে থাকে স্ট্রাইক। শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১৪ রান। এখানে প্রথম বলে ২ রান আসে। দরকার ৫ বলে ১২ রান। এখানেই ছক্কা হাঁকান হার্দিক। খেলার মোড় ঘুরে যায় ভারতের দিকে।
তখন ৪ বলে দরকার ৬ রান। এখানে পরের বল খেলতে পারেননি পাণ্ডিয়া। দরকার ৩ বলে ৬ রান। আর এখানে ফের হার্দিকের ব্যাট থাকে আসে সেই দুরন্ত ছক্কা। যা ভারতকে এই ম্যাচে জয় এনে দেয়। এনে দেয় সিরিজ জয়ের আনন্দও।
২ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় ভারত। ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজে ভারত ২-০-তে এগিয়ে সিরিজ জিতল। শেষ ম্যাচ মঙ্গলবার। ওটা জিততে পারলে হোয়াইট ওয়াশটাও হয়ে যাবে অজিদের মাঠে।