ইংল্যান্ডের ব্যাটিং শেষ হওয়ার পর ভারতের কেউ বোধহয় এমন স্বপ্নের জয়ের কথা কল্পনা করেননি! কিন্তু একজন হয়তো দেখেছিলেন। তাঁর নাম বিরাট কোহলি। যিনি হয়তো এমন এক ক্রিকেটার যিনি যা ভাবেন তা বাস্তবে করে দেখানোর ক্ষমতা ধরেন। গোটা দল যখন বিশাল স্কোরের পিছনে ছুটতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ছে তখন তিনি ব্যাট হাতে জয়ের মুহুর্ত কল্পনার সাহস রাখেন। একদিনের ম্যাচের অধিনায়কত্বের ব্যাটন সবে গেছে তাঁর হাতে। একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের অভিষেক। আর সেই অভিষেককে কতটা রাজকীয় করা যায় তা এদিন পুনের মাঠে করে দেখালেন বিরাট। দাঁড়িয়ে থেকে ম্যাচ জেতানো, ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব পকেটে পোরা, ৩৫০ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করে জেতা, সবকিছুই তাঁর মনে রাখার মত জয়ের সাক্ষী হয়ে রইল। দিনরাতের ম্যাচে পুনের পিচে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। খেলার শেষটাও ভারতের রাজকীয় বৈকি। ১১ বল বাকি থাকতেই ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন অশ্বিন। ভারত জেতে ৩ উইকেটে। প্রথম থেকে ওয়ান ডে-র মত খেলাও খেলছিল ইংল্যান্ড। পুরো স্কোর বোর্ডে কারও নামের পাশে শতরান নেই। কিন্তু ৫০ ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৩৫০ রান। ভারতের জন্য এই কঠিন লক্ষ্য স্থির করায় পরপর ভাল রানের ব্যাটিং রয়েছে ব্রিটিশদের। জেজে রয় ৭৩, জো রুট ৭৮, স্টোকসের ৬২ রান, বাটলার ৩১, মর্গানের ২৮ ও আলির ২৮ রান ইংল্যান্ডকে জেতার মত ভাল স্কোরে পৌঁছে দেয়। ভারতের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর হয় শেষ ১০ ওভার। যেখান থেকে ১১৫ রান ঝুলিতে পোরে ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বড় রান তাড়া করার হুড়োহুড়িতে উইকেট পড়তে থাকে ভারতের। একে একে শিখর ধাওয়ান, কে এল রাহুল, যুবরাজ সিং ও মহেন্দ্র সিং ধোনি প্যাভিলিয়নে ফেরার পর সকলে ধরেই নিয়েছিলেন খেলাটা নিছকই নিয়ম রক্ষায় পরিণত হয়েছে। জয় ইংল্যান্ডের নিশ্চিত। পুনের স্টেডিয়ামের দর্শকরা বিরাট কোহলির ব্যাটিং দেখার আশায় শুধু স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে যাননি। এই অবস্থায় শুরু থেকেই ছন্দে থাকা বিরাটের সঙ্গে যুগলবন্দি শুরু করেন টিমে নতুন আসা কেদার যাদব। কিন্তু কিছু বলের অপেক্ষা। তারমধ্যেই নিজের জাত চেনাতে শুরু করেন দেশের এই তরুণ ব্যাটসম্যান। যাঁর ব্যাট থেকে এদিন শুধুই চোখ জুড়নো শট এসেছে। যার তারিফ করতে বাধ্য হয়েছেন ক্রিকেট বোদ্ধারাও। বিরাট আর কেদারের আগ্রাসী ব্যাটে ক্রমশ ইংল্যান্ডের চওড়া হাসি শুকিয়ে যেতে থাকে। অন্যদিকে হাল ছাড়া দেশবাসী ফের নতুন উদ্যমে নড়েচড়ে বসেন টিভির সামনে। দুজনের ব্যাট থেকেই শতরান এই মরা ম্যাচেও ভারতকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়। দুজনের শতরানও হয়েছে রাজার মত। বিরাট ছক্কা হাঁকিয়ে আর কেদার চৌকা হাঁকিয়ে নিজের শতরান পূর্ণ করেন। ৯৩ বলে বিরাট আর ৬৩ বলে কেদার শতরান পূর্ণ করার পর ব্যক্তিগত ১২২ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় বিরাটকে। হাল ধরেন কেদার আর পাণ্ডিয়া। কিন্তু ব্যক্তিগত ১২০ রানের মাথায় আউট হয়ে যান কিয়দংশে দম হারানো কেদার যাদব।